একের পর এক অঘটন। সেই সঙ্গে তৈরি হচ্ছে একের পর এক ইতিহাস। বিশ্ব ফুটবলে লেখা হচ্ছে রূপকথার সব গল্প। বৃহস্পতিবারই স্পেনকে হারিয়ে জাপান জায়গা করে নিয়েছিল নকআউটে। জিতেও ছিটকে গিয়েছিল জার্মানি। শুক্রবার যেন সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি। শুধু দলগুলি আলাদা।
শুক্রবার পর্তুগালকে হারিয়ে এশিয়ারই আর এক টিম দক্ষিণ কোরিয়া লিখে ফেলল ইতিহাস। তারা এশিয়ার দ্বিতীয় টিম হিসেবে পৌঁছে গেল নকআউটে। আর জিতেও ছিটকে গেল উরুগুয়ে। প্রসঙ্গত, গত বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরেই ছিটকে গিয়েছিল জার্মানি।
পর্তুগাল বনাম দক্ষিণ কোরিয়া
ইনজুরি টাইমে ওয়াং হি চ্যান-এর দুরন্ত গোল। আর তাতেই বদলে গেল যাবতীয় অঙ্ক। বিশ্বকাপের নকআউটে পৌঁছে গেল কোরিয়া। কাতারে গ্রুপ লিগের তিনটি ম্যাচ জেতা হল না ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোদের। তাঁরাও শেষ ম্যাচ হেরে গেলেন। ২০০২ সালের বিশ্বকাপেও দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে হেরেছিল পর্তুগাল। এ বারও হারল। কোরিয়া অপ্রতিরোধ্য হয়ে থাকল পর্তুগালের কাছে।
এ দিন রোনাল্ডো একেবারেই নিষ্প্রভ ছিলেন। ৬৫ মিনিট মাঠে থাকলেও, তাঁকে খুঁজেই পাওয়া গেল না সে ভাবে। তার ওপর সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। যদিও আগেই শেষ ষোলোর টিকিট সংগ্রহ করে ফেলেছিল পর্তুগাল। যে কারণে এ দিন দলে ছ'টি পরিবর্তন করেন ফার্নান্দো স্যান্টোস। রুবেন ডিয়াস, জোয়াও ফেলিক্স, ব্রুনো ফার্নান্ডেজদের বিশ্রাম দেন। ম্যাচের আগে শোনা গিয়েছিল বিশ্রাম দেওয়া হবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকেও। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম একাদশেই ছিলেন দলের অধিনায়ক।
আরও পড়ুন: শেষ ষোলোয় জাপান কার বিরুদ্ধে খেলবে?স্পেনের প্রতিপক্ষ কে?জানুন সূচি
এ দিন আক্রমণাত্মক মেজাজেই শুরুটা করেছিল পর্তুগাল। ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় এগিয়েও যায় তারা। পর্তুগাল। দিয়োগো দালতের মাইনাস ধরে ছ'গজ দূর থেকে ভলিতে গোল করেন রিকার্ডো হোর্তা। প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েই ছাপ রাখলেন তিনি। ম্যাচের ১৪ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ ছিল জোয়াও ক্যান্সলোর সামনে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার গোলকিপার কিম সিউং রুখে দেন তাঁর শট। তার দু'মিনিটের মধ্যে কোরিয়ার নিশ্চিত গোল সেভ করেন দিয়েগো কোস্টা। তবে ম্যাচের ২৯ মিনিটে সমতা ফেরায় দক্ষিণ কোরিয়া। কর্নার বক্সের মধ্যে ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন পর্তুগিজ ডিফেন্ডাররা। রোনাল্ডোর পিঠে বল লেগে কিমের পায়ের সামনে পড়ে। গোল করতে ভুল করেননি কিম ইউং ওন।
রোনাল্ডোর সেরা সুযোগ ৩১ মিনিটে। দক্ষিণ কোরিয়ার গোলকিপারকে ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ সিআরসেভেন। তার মিনিট দশেকের মধ্যেও সুযোগ এসেছিল। কিন্তু রাতটা রোনাল্ডোর ছিল না। বিরতির ঠিক আগে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ নষ্ট করে দক্ষিণ কোরিয়াও। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই গোলের আপ্রাণ চেষ্টা করে। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারেনি। তবে ইনজুরি টাইমে আসল কাজটা করে যায় দক্ষিণ কোরিয়া। সনের পাস থেকে সুপার সাব ওয়াং হি চ্যান কোরিয়াকে পৌঁছে দেন নকআউটে। হেরে মাঠ ছাড়তে হয় পর্তুগালকে।
উরুগুয়ে বনাম ঘানা
গ্রুপের অন্য ম্যাচে উরুগুয়ে ২-০ গোলে ঘানাকে হারালেও, স্বপ্ন ভঙ্গ হয় তাদের। গোলের ব্যবধানটা যদি ৩-০ হত, তবেই নকআউটে চলে যেতে পারতেন সুয়ারেজরা। ম্যাচ শেষে রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই কান্নায় ভেঙে পড়েন লুই সুয়ারেজ। বিশ্বমঞ্চ আরও এক সুপারস্টারের শেষ বিশ্বকাপ দেখে ফেলল।
আরও পড়ুন: এখনও পা ফোলা, ব্যথা রয়েছে- নেইমারকে বাকি বিশ্বকাপে পাওয়া যাবে তো?
লাতিন আমেরিকার দলটি এ দিন ম্যাচ শুরু করেছিল আক্রমণাত্মক মনোভাবেই। শুরু থেকেই লক্ষ্য ছিল যে ভাবে হোক ঘানার বক্সে বল ঢোকানো। ম্যাচের প্রথম সুযোগ পেয়েছিল ঘানাই। ১৬ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি তারা। উরুগুয়ের গোলকিপার সান্দ্রো রশেট পেনাল্টি বাঁচানোয় আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় উরুগুয়ের। আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় তারা। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দু’টি গোল সেটাই প্রমাণ করেন। ২৬ মিনিটের মাথায় জিওর্জিয়ান ডি আরাসকেইটা এগিয়ে দেন উরুগুয়েকে। এর ছ'মিনিট পর দ্বিতীয় গোল আরাসকেইটার।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।