১২ বছর ধরে রোমান ক্যাথলিকদের আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর প্রয়াত হয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর প্রয়াণের ফলে এবার শুরু হবে নতুন পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া। পোপ হলেন ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ নেতা। ১.৪ বিলিয়ন মানুষের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু। প্রভু যিশুর প্রধান শিষ্য। ফলে আস্থার দিক থেকে খ্রিস্টান সমাজ ও চার্চে পোপের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে শুধুমাত্র পুরুষকেই বেছে নেওয়া হয়। সেখানে কোনও মহিলার জায়গা নেই।
আরও পড়ুন-নতুন পোপ নির্বাচন! ৪ ভারতীয় কার্ডিনালের হাতে বিশেষ ক্ষমতা
পোপের মৃত্যু পর বা পদ্যত্যাগ করার পর ১৫-২০ দিন সময় নেয় রোমান ক্যাথলিক চার্চ। এই সময়ের মধ্যে সারা বিশ্ব থেকে চার্চের সবচেয়ে প্রবীণ আধিকারিকরা রোমে এসে উপস্থিত হন। তাদের সম্মিলিতভাবে ‘কলেজ অব কার্ডিনালস’ বলা হয়। ভ্যাটিকান থেকে তাদের কাছে পোপ নির্বাচনে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ আসে।নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সকলকে তাদের পছন্দের ব্যক্তির নাম কাগজে লিখে জানাতে হয়। কঠোর প্রোটোকল অনুসারে, এই নির্বাচনে শুধুমাত্র পুরুষরাই অংশগ্রহণ করতে পারবেন, কোনও মহিলা নয়। পোপ হওয়ার অধিকার থেকে মহিলাদের বাদ দেওয়ার বিষয়টি চার্চের দীর্ঘদিনের রীতির সঙ্গে যুক্ত, এই বিষয়টি কেবল পুরুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। ক্যানন আইন (ক্যানন ১০২৪) অনুসারে, শুধুমাত্র দীক্ষিত পুরুষদেরই পোপ হিসেবে নিযুক্ত করা যেতে পারে। আসলে খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস যে প্রভু যীশু কেবল পুরুষদের শিষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, যে নিয়ম ক্যাথলিক চার্চে দুই সহস্রাব্দেরও বেশি সময় ধরে চলছে।
আরও পড়ুন-নতুন পোপ নির্বাচন! ৪ ভারতীয় কার্ডিনালের হাতে বিশেষ ক্ষমতা
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিলিজিওন এন্ড পাবলিক পলিসি প্রোগ্রামের ডিরেক্টর রেভারেন্ড টমাস রিজের মতে, পোপের মতো পদের জন্য অর্ডিনেশন প্রয়োজন এবং মহিলাদের পুরোহিত হওয়ার অনুমতি নেই। ইতিহাসের দিক থেকে, পোপ হওয়ার মানদণ্ড মতবাদের পরিবর্তে নজিরের উপর ভিত্তি করে। ১৪৫৫ সালে পোপ ক্যালিক্সটাস তৃতীয় ছিলেন পোপ নির্বাচিত হওয়া শেষ অ-পুরোহিত এবং ১৩৭৮ সালে আরবান ষষ্ঠ ছিলেন শেষ অ-কার্ডিনাল পুরোহিত যাকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। ক্যাথলিক চার্চের ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে, যিশু খ্রিস্ট ১২ জন পুরুষকে তাঁর শিষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, যারা পরে তাদের পরিচর্যা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অন্যান্য পুরুষদের বেছে নিয়েছিলেন। ফলস্বরূপ, চার্চ এই পুরুষতান্ত্রিক ঐতিহ্য বজায় রেখেছে।২০২৩ সালের একটি প্রকাশনা অনুযায়ী, পোপ ফ্রান্সিস ক্যাথলিক চার্চের ঐতিহ্যবাহী মতবাদ পুনর্ব্যক্ত করে বলেছিলেন, মহিলারা পোপ হিসেবে নিযুক্ত হতে পারে না।