সুপ্রিম কোর্ট জমির ক্ষতিপূরণের বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে, যার ফলে সারা দেশে অনেক কৃষক এবং অন্যান্য মানুষ বড় স্বস্তি পেতে চলেছেন। বৃহস্পতিবার দেশের শীর্ষ আদালত সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে রায় দিয়েছে, যে সরকার কোনও জমি অধিগ্রহণ করলে এবং দীর্ঘসময় ধরে ক্ষতিপূরণ প্রদানে বিলম্ব করলে জমির মালিক বর্তমান বাজারের সমান ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী হবেন। কর্ণাটক ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (কেআইএডিবি)-র বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি পিটিশনে এই রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন: আপনারা অযোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিতে চাননি! SSC মামলায় কান গরম হল রাজ্য সরকারের
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ২০০৩ সালে বেঙ্গালুরু-মাইসুরু ইনফ্রাস্ট্রাকচার করিডোর প্রকল্পের জন্য কয়েক হাজার একর জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল কেআইএডিবি। তবে জমি হস্তান্তর করার সময় মালিকদের ক্ষতিপূরণের জন্য কোনও অর্থ দেওয়া হয়নি। জমির ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় জমির মালিকরা আদালতে যান। এরপর ২০১৯ সালে ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার জন্য আদালত অবমাননার মামলা হয়। তবে জমিদাতাদের ২০০৩ সালের হিসেবে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে বোর্ড। পরে কর্ণাটক হাইকোর্টে তা চ্যালেঞ্জ করা হয়।
কর্ণাটক হাইকোর্ট আদেশ দেয়, জমি বোর্ডকে ২০১৯ সালের বাজার মূল্য নির্ধারণ করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলায় শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিআর গাভাই এবং কেভি বিশ্বনাথন বলেছেন, জমির মূল্য অবশ্যই ২০১৯ সালের হিসাবে গণনা করা উচিত। সংবিধান (৪৪ তম সংশোধন) আইন, ১৯৭৮ এর মাধ্যমে সম্পত্তির অধিকার আর মৌলিক অধিকার নয়। তবে, এটি একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে একটি মানবাধিকার এবং সংবিধানের ৩০০এ অনুচ্ছেদের অধীনে একটি সাংবিধানিক অধিকার হিসাবে রয়ে গিয়েছে।
বিচারপতি গাভাই বলেছেন, জমির মালিকরা প্রায় ২২ বছর ধরে তাদের বৈধ পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এবং যদি ২০০৩ সালের হিসাবে জমির বাজার মূল্য গণনা করা হয় তবে তারা প্রতারিত হবেন। তাই এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জমির মূল্য নির্ধারণ এবং জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দ্রুততার সঙ্গে দেওয়া উচিত। এই বলে শীর্ষ আদালত জমি অধিগ্রহণকারী বোর্ডকে ২০১৯ সালের বাজারদর হিসেবে জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।