একদিকে দেশের কেয়ারটেকার সরকার যুদ্ধের জিগির তুলছে, আর অন্যদিকে বাংলেদেশজুড়ে বেড়েই চলেছে বেকারের সংখ্য়া! বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেই এই সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এবং সেটাও পড়শি দেশের সরকারি হিসাব অনুসারে!
বাংলাদেশ ব্যুরো অফ স্ট্যাটিকটিক্স বা বিবিএস-এর হিসাব বলছে, চলতি আর্থিক বছরের (২০২৪-২৫) দ্বিতীয় ত্রেমাসিকে (জুলাই ২০২৪ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৪) বাংলাদেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬ লক্ষ ৬০ হাজার! রবিবার বিবিএস-এর তরফে শ্রম শক্তি সমীক্ষা ২০২৪-এর যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, তাতেই সামনে এসেছে এই তথ্য়।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই সময়ের মধ্য়েই বাংলাদেশে একের পর এক ঘটে গিয়েছে 'জুলাই বিপ্লব', শেখ হাসিনা সকারের পতন এবং নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন। আর, তারপর থেকেই শুরু হয়েছে বাংলাদেশের তুমুল ভারত বিদ্বেষ ও হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর নিদারুণ নিপীড়ন!
বাংলাদেশি অনলাইন পোর্টাল - ঢাকা ট্রিবিউন - এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, 'ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অফ লেবার স্ট্যাটিকটিক্স' বা ১৯তম আইসিএলএস-এর নিয়ম অনুসারে বাংলাদেশের নয়া বেকারত্বের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই নিয়ম অনুসারে, যে সমস্ত ব্যক্তিরা কোনও উৎপাদনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও পণ্য বিক্রি বা বাজারে কোনও পরিষেবা প্রদানের সঙ্গে যুক্ত থাকেন না, তাঁদের বেকার বা কর্মহীন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
বিবিএস-এর একজন প্রতিনিধি বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই প্রথম এই ফরমুলায় দেশে সমীক্ষা চালানো হল এবং বেকারদের সংখ্যা নির্ধারণ করা হল। ওই আধিকারিকের দাবি, এর ফলে পরিসংখ্য়ানে কিছু অসঙ্গতি তৈরি হতে পারে।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এর আগে ১৩তম আইসিএলএস ভিত্তিক যে সমীক্ষা করা হয়েছিল, সেই অনুসারে - বাংলাদেশে কর্মরত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি ৬০ লক্ষ। যার মধ্য়ে পুরুষের সংখ্য়া প্রায় ৪ কোটি ৭৪ লক্ষ ৯০ হাজার এবং মহিলার সংখ্য়া প্রায় ২ কোটি ২৫ লক্ষ ৭০ হাজার।
আগের এই সমীক্ষা অনুসারে, উপরোক্ত শ্রমিক শক্তির অধীনে অন্তত ৬ কোটি ৭৫ লক্ষ ১০ হাজার এমন মানুষ রয়েছেন, যাঁরা মজুরি পাওয়ার জন্য সাতদিনে অন্তত একঘণ্টা শ্রম দান করেন।
এই তালিকায় পুরুষ ও নারীর সংখ্যা যথাক্রমে - ৪ কোটি ৫৭ লক্ষ ৭০ হাজার এবং ২ কোটি ১৭ লক্ষ ৪০ হাজার। এই বিশেষ গোষ্ঠীটিকে কর্মরত বা কর্মহীন - এই দুইয়েরই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এঁদের মধ্য়ে রয়েছেন পড়ুয়া, প্রবীণ, অসুস্থ, অবসরপ্রাপ্ত, গৃহবধূ এবং সেইসব ব্যক্তি - যাঁরা নানা কারণে কাজ করে রোজগার করতে পারেন না।
বাংলাদেশি অনলাইন পোর্টাল কালের কণ্ঠ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে বেকারত্ব বাড়ার অন্যতম কারণ হিসাবে মূলত দু'টি বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন অর্থনীতিবিদরা। প্রথমত, গত একবছরে বাংলাদেশে তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ না হওয়া এবং দ্বিতীয়ত, লাগাতার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অস্থিরতা।
এর ফলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের কৃষি ক্ষেত্র। গত এক বছরে এই ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ১৫ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষ কাজ হারিয়েছেন!