ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার এজেন্টদের অত্যাধিক চাপের কারণে আত্মঘাতী হলেন এক ব্যক্তি। এই ঘটনায় চারটি বেসরকারি ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বেলাগাভি জেলায়। জানা গিয়েছে, বিষ খাওয়ার পর ওই ব্যক্তি বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবশেষে তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: অঙ্ক পরীক্ষার পর থেকেই মনভার ছিল, পিংলায় মিলল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত দেহ
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিষ খেয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল বেলাগাভির একটি সরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় তাঁর স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে চারটি বেসরকারি আর্থিক সংস্থা এবং এজেন্টদের বিরুদ্ধে বিএনএসের ১০৮ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
অভিযোগে মৃতের স্ত্রী বলেছেন, যে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি এবং তাদের এজেন্টরা তাঁর স্বামীকে এই চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। কারণ আদায়কারী এজেন্টরা প্রায়ই তাঁকে বকেয়া কিস্তির জন্য হয়রানি করত। এমনকী বাড়ির জিনিসপত্রও বাজেয়াপ্ত করার হুমকি দিত।পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, যে ওই ব্যক্তি ২.৫ লক্ষ টাকার ঋণ নিয়েছিলেন। সাপ্তাহিক সুদের কিস্তিতে তা পরিশোধ করার শর্তে রাজি হয়েছিলেন তিনি। তবে, তিনটি কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি। এরপরেই ঋণ আদায়কারী এজেন্টরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে বকেয়া পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকেন।
বেলাগাভির পুলিশ সুপার ভীমাশঙ্কর গুলেদ জানান, পুলিশ ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া নয়া নিয়ম সম্পর্কে সমস্ত নথিভুক্ত ক্ষুদ্রঋণ এবং বেসরকারি অর্থ সংস্থাগুলিকে অবহিত করেছে। এক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন হলে ১০ বছরের কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে। পুলিশ এই নিয়ম ঋণ সংস্থাগুলিকে মেনে চলতে বলেছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলির কর্তাদের তলব করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, নিয়মে বলা হয়েছে, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলি ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে কোনও জামানত সংগ্রহ করবে না। মূলত নারী, কৃষক এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সুবিধার্থে এই নিয়ম জারি করা হয়েছে। এছাড়াও, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলিকে গ্রাহকদের সুদের হারের লিখিত তথ্য দিতে হবে। সেই নিয়ম না মানলে পুলিশ জোর করে আদায়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে।