এক অনবদ্য ক্রিসমাসের সাক্ষী থাকলেন জাপানের বাসিন্দারা। সেখানে জিঙ্গল বেলসের সুরে 'হরে কৃষ্ণ' গাইলেন ইসকনের ভক্তরা! সেই শোভাযাত্রার দৃশ্য ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়।
প্রসঙ্গত, বড়দিনের সময় ক্যারোলিং একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঙ্গীতের সুরে খ্রিস্টানদের পাশাপাশি অন্য়ান্য ধর্মের মানুষও একজোট হন। আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠেন সকলে মিলে। চারিদিকে অনুরণিত হয়ে যায় জিঙ্গল বেলস অথবা সাইলেন্ট নাইট-এর সুর!
সবথেকে বড় কথা হল, এই ক্যারোলে অংশ নেওয়ার জন্য ভাষা পর্যন্ত কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। কিন্তু, তা বলে জিঙ্গল বেলসের সুরে হরে কৃষ্ণ! এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেছে কিনা, সেটা বলা বেশ মুশকিল।
ইনস্টাগ্রামে এই শোভাযাত্রার যে ছবি ভাইরাল হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, জাপানের ব্যস্ত শহুরে রাস্তার উপর দিয়ে এগিয়ে চলেছে এক ঝলমলে শোভাযাত্রা। তাতে যাঁরা অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁরা সকলেই কৃষ্ণ ভক্ত। অথচ, তাঁদের কেউ সেজেছেন সান্তা ক্লজ, তো কেউ সান্তার এলভের মতো পেল্লায় আকারের নকল কান পরেছেন। কেউ আবার সান্তার বিখ্যাত স্লেজ গাড়ির সেই রেনডিয়ারগুলির (হরিণ) মতো নকল সিং নিজেদের মাথায় লাগিয়েছেন।
ইসকনের ভক্তরা যখনই কোনও নগরকীর্তন করেন, তখন তাঁদের হাতে নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্র থাকে। যেমন - খোল, করতাল, খঞ্জনী ইত্য়াদি। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ব্যতিক্রম যেটা ছিল, তা হল একেবারে নিখুঁতভাবে জিঙ্গল বেলসের সুরে কৃষ্ণের ভঞ্জনা! যা মোহিত করে দিয়েছে নেটিজেনদের।
একদিকে যখন অশান্ত বাংলাদেশে ইসকন, সেখানকার সন্ন্যাসী ও ভক্তরা চরম হিংসার শিকার, সেখানে জাপানের মাটিতে দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের এই মেলবন্ধন অসংখ্য মানুষের মন ভরিয়ে দিয়েছে। এই আয়োজনের যাঁরা উদ্যোক্তা, তাঁদের সাধুবাদে ভরিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা।
শুধু তাই নয়। জাপানে যখন এই শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেই সময়ে পথচলতি মানুষও অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইসকনের ভক্তদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এসব দেখে এক নেটিজেন লিখেছেন, 'আজকের দিন আমার দেখা সেরা ভিডিয়ো এটি'! ইতিমধ্য়েই হাজার হাজার মানুষ এই ভিডিয়োটি সোশাল মিডিয়ায় লাইক করেছেন। ভিডিয়োটি শেয়ারও হয়েছে প্রচুর পরিমাণে। ইতিবাচক কমেন্টে ভার্চুয়াল দেওয়াল ভরিয়ে দিয়েছেন ইন্টারনেট ইউজাররা।
তেমনই একজন লিখেছেন, 'আপনারা সকলকে অনুপ্রাণিত করেছেন। আমার সত্যিই এটা খুব ভালো লেগেছে।' আরও এক নেটিজেনের বক্তব্য, 'দুই ধর্মের মিশ্রণের অভূতপূর্ব সৌন্দর্য!' আরও একজনের কথায়, 'এটাই হল ধর্মনিরপেক্ষতার সেরা নিদর্শন'।