বাজেট পেশের সময়ই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেছিলেন ভারতীয় রেলে 'কবচ' সুরক্ষার। তিনি জানিয়েছিলেন 'আত্মনির্ভর ভারত' প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার কিলোমিটার রেল নেটওয়ার্কে বসতে চলেছে ভারতের মাটিতে তৈরি বিশ্বমানের প্রযুক্তি 'কবচ'। যার হাত ধরে দেশে ট্রেন দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে। উল্লেখ্য, বিভিন্ন দেশে রেল দুর্ঘটনা এড়াতে একাধিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এবার ভারতের মাটিতে তৈরি বিশ্বমানের এই প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে আরও জোরদারভাবে এগিয়ে চলেছে রেল।
উল্লেখ্য, অ্যান্টি-কোলিশন প্রযুক্তির এই কবচ 'এসআইএল৪' সার্টিফায়েড। যে সংশাপত্রের অর্থ ১০ হাজার বছরে একবার সম্ভাব্য ভুল করতে পারে এই প্রযুক্তি। একথা জানিয়েছেন খোদ দেশের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। তিনি বলেন, 'নতুন বন্দে ভারত ও কবচ সংক্রান্ত ঘোষণা ভারতীয় রেলের যাত্রীদের অভিজ্ঞতা পাল্টে দিতে চলেছে।' উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেটে ৪০০ টি নতুন বন্দেভারত ট্রেনেরও ঘোষণা করেন। এদিকে, জানা গিয়েছে সারা দেশের ২ হাজার কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে কলকাতা ও দিল্লির রুটের ২৬০ কিলোমিটার রেলপথে বসতে চলেছে কবচ। এই বিশেষ কবচ অ্যান্টি কলিসন প্রযুক্তিতে রেলের দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে বলে জানা যাচ্ছে। রেডিও কমিউনিকেশন, মাইক্রোপ্রসেসার, জিপিএস প্রযুক্তিতে এই গোটা বিষয়টি কাজ করবে। তবে শুধু দুরপাল্লার ট্রেনে নয়। এক সূত্রের দাবি অনুযায়ী, হাওড়া ও শিয়ালদহ রুটের একাধিক লোকাল ট্রেনেও বসতে চলেছে কবচ প্রযুক্তি। বিশেষজ্ঞদের বার্তা একই লাইনে দুটি ট্রেন চলে আসার ফলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনাগুলি ঘটে যায়। সিগন্যালের সমস্যা থেকে লাইনচ্যূত হওয়ার ঘটনা, এই দুই কারণই ভারতে রেল দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বলা হচ্ছে, কবচ প্রযুক্তিতে দুটি ভিন্ন ডিভাইস থাকবে। একটি ডিভাইস থাকবে লাইনে আর অন্য ডিভাইসটি থাকবে ইঞ্জিনে। বিপদ বুঝলে লাইন থেকে সংকেত যাবে ইঞ্জিনের ডিভাইসের কাছে। সেই অনুযায়ী ইঞ্জিনের ডিভাইস কাজ করবে। ব্রেক নিজে থেকে কষে ট্রেন থামিয়ে রেল দুর্ঘটনা রুখে দিতে পারবে কবচ। ফলে এই নয়া প্রযুক্তি ঘিরে আশার আলো দেখছে রেল মন্ত্রক। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ময়নাগুড়িতে রেল দুর্ঘটনার পর ফের রেল যাত্রা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। তবে কবচের হাত ধরে সেই সমস্যা অনেকটাই কাটানো যাবে বলে মেন করছেন বহু বিশেষজ্ঞ।