মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে বাংলাদেশ যে আপত্তি জানিয়েছে, তা স্বীকার করে দিল ভারত। সেইসঙ্গে মমতাকে সংবিধানের পাঠ দিয়ে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, অন্য কোনও দেশ বা বৈদেশিক কোনও বিষয় নিয়ে পদক্ষেপ করার কোনও অধিকার নেই কোনও রাজ্য সরকারের। সংবিধান সেই অধিকার দেয়নি রাজ্যকে। বিষয়টি একান্তভাবে ভারত সরকারের হাতে আছে। তাই অহেতুক বৈদেশিক বিষয় নিয়ে কোনও রাজ্যের নাক গলানোর কোনও প্রয়োজন নেই বলে স্পষ্টভাবে জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
বাংলাদেশ ‘নোট’ পাঠিয়েছে, স্বীকার নয়াদিল্লির
বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারছি যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর করা মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের থেকে আমরা একটি কূটনৈতিক নোট পেয়েছি। আপনারা (মিডিয়া) রিপোর্টে যেমনটা দেখেছেন, খানিকটা সেরকমই (নোট পাঠানো হয়েছে)।’
মমতাকে সাংবিধানিক পাঠ বিদেশ মন্ত্রকের
সেই রেশ ধরেই এস জয়শংকরের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘ভারতের সংবিধানের সপ্তম তফসিলের প্রথম তালিকার ১০ নম্বর আইটেমে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে বিদেশ সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় এবং অন্য কোনও দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে একমাত্র ভারত সরকারের অধিকার আছে।’
সেইসঙ্গে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘এই বিষয়টি যৌথ তালিকায় নেই। আর অবশ্য রাজ্যের তালিকায় নেই। আমাদের অবস্থানটা স্পষ্ট, সাংবিধানিক এক্তিয়ারের বাইরের কোনও বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
মমতার কোন মন্তব্য নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ বাংলাদেশের?
গত রবিবার একুশে জুলাইয়ের সভা থেকে মমতা বলেছিলেন যে বাংলাদেশ নিয়ে কারও কোনও সহযোগিতার প্রয়োজন থাকলে তাঁকে যেন জানানো হয়। অসহায় মানুষদের সাহায্য করবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তবে বাংলাদেশে যে আন্দোলন চলছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না। বিষয়টি নিয়ে যা বলার, তা ভারত সরকার বলবে। সেইসঙ্গে মমতা জানান, অসহায় মানুষ যদি বাংলার দরজায় কড়া নাড়েন, তাহলে রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাব মেনে তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হবে।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়া
বৃহস্পতিবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, '(বাংলাদেশের) ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে আমরা আশা করছি যে ওই দেশের পরিস্থিতি খুব শীঘ্রই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ওই দেশের সঙ্গে আমরা উষ্ণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে।' সেইসঙ্গে তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৬,৭০০-র বেশি ভারতীয় পড়ুয়া ফিরে এসেছেন। আর সেটার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের দারুণ সহযোগিতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।