'অখণ্ড বাংলাদেশ' গড়ার ডাক দেওয়ায় মাহফুজ আলমকে তুলোধোনা করল ভারত। তবে সরাসরি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের নাম করা হয়নি। বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুধু বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে উত্থাপন করেছি। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমি যা জানি, তাতে যে পোস্টের কথা বলা হচ্ছে, সেটা তুলে নেওয়া হয়েছে (মুছে ফেলা হয়েছে)। জনসমক্ষে যে মন্তব্য করা হচ্ছে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকল লোকজনকে সংযত থাকার বিষয়টি মনে করিয়ে দিচ্ছি আমরা।’
দায়িত্ববান হতে হবে, কড়া বার্তা ভারতের
এস জয়শংকরের মন্ত্রকের মুখপাত্র আরও বলেছেন, ‘ভারত যখন বারবার বাংলাদেশের মানুষ এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তখন এরকম মন্তব্য থেকে প্রমাণিত হয় যে জনসমক্ষে এরকম বক্তব্য পেশ করার ক্ষেত্রে দায়িত্ববান হতে হবে।’
বিতর্কিত মানচিত্র পোস্ট, চাপে পড়ে ডিলিট
আর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুসের ‘খাস’ লোক মাহফুজের যে পোস্ট ঘিরে বিতর্ক হয়েছিল, সেটা তিনি অবশ্য মুছে দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে মাহফুজের সেই পোস্টে একটি মানচিত্র দেওয়া হয়েছিল, যাতে পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং ত্রিপুরাকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছিল। সেইসঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গে ভারতের অন্যান্য অংশের যে সাংস্কৃতিক পার্থক্য আছে, সেটাও মাহফুজের পোস্টে বলা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
আগেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত
স্বভাবতই বিষয়টি ভারত ভালো চোখে দেখছে না। বৃহস্পতিবার একেবারে কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নয়াদিল্লি। তবে সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে আগেই ঢাকাকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে অবহিত আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে কড়া বার্তা।
আর এমন সময় সেই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, যখন সবে অগস্টের পরবর্তীতে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হতে শুরু করেছিল। বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার, হিন্দু সন্ন্যাসী তথা সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাসকে গ্রেফতারির মতো ঘটনা নিয়ে সম্পর্কে বেশ চাপানউতোর চলছিল। তবে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরের পরে কিছুটা উত্তেজনা প্রশমিত হতে শুরু করেছিল।