কখনও বিমানবন্দর, কখনও বিমান, কখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তো কখনও খোদ আরবিআই - গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একের পর এক ভুয়ো বোমাতঙ্ক ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে নাজেহাল হতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনকে। এই প্রেক্ষাপটে এবার বিমানে ভুয়ো বোমাতঙ্ক বা ভুয়ো বিস্ফোরণে হুমকির ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিল কেন্দ্রীয় সরকার।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ইতিমধ্য়েই বিমান (নিরাপত্তা) বিধিমালা, ২০২৩ -এ বেশ কিছু সংশোধন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে এবার থেকে বিমানে ভুয়ো বোমাতঙ্ক ছড়ানোয় দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা আর্থিক জরিমানা করা যাবে।
এই মর্মে গত ১৬ ডিসেম্বর একটি গেজেট নোটিফিকেশ দিয়েছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। তার মাধ্যমেই বিমান (নিরাপত্তা) বিধিমালা, ২০২৩ -এর মধ্য়ে ৩০এ ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই ধারা অনুসারে, এমন কোনও মিথ্য়া দাবি, যার ফলে বিমানের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিঘ্নিত হতে পারে, তাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে। কারণ, এই ধরনের ঘটনায় বিমানযাত্রী থেকে শুরু করে বিমানকর্মী, সকলের মধ্যেই ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং বিমান পরিষেবাও ব্যাহত করে।
এর পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট বিধিমালায় আরও একটি ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেটি হল - ২৯এ। নতুন এই ধারার মাধ্যমে ডিরেক্টর জেনারেলকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে তিনি যেকোনও ব্যক্তি বা দলকে বিমানে উঠতে দিতে অস্বীকার করতে পারেন অথবা তাঁদের বিমান থেকে নামতেও বাধ্য করতে পারেন। দু'টি ক্ষেত্রেই ডিরেক্টর জেনারেল লিখিত নির্দেশিকা জারি করতে পারবেন।
এমনকী, নতুন দুই ধারার অধীনে কোনও ব্যক্তি, দল বা সংস্থার বিরুদ্ধে ভুয়ো বোমাতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে দোষীকে ১ লক্ষ, ৫০ লক্ষ, ৭৫ লক্ষ এবং সর্বাধিক ১ কোটি টাকার জরিমানা করা যাবে। জরিমানার পরিমাণ নির্ভর করবে কতজন মিলে এই কুকীর্তি ঘটিয়েছে, সেই সংখ্য়ার উপর।
অসামরিক বিমান পরিষেবা মন্ত্রকের হাতে আসা তথ্য বলছে, চলতি বছরের শুরু থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বিমানে ভুয়ো বোমাতঙ্ক ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে মোট ৯৯৯টি। যার মধ্যে শুধুমাত্র গত অক্টোবর মাসেই ৬৬৬ বার এই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তবে, সেইসব ঘটে যাওয়া ঘটনার উপর নতুন নিয়ম কার্যকর হবে না।
উল্লেখ্য, অক্টোবর মাসে এতগুলি ভুয়ো বোমাতঙ্ক ছড়ানোর ঘটনা ঘটলেও পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে মাত্র দুই অভিযুক্ত। তাদের মধ্যে একজন হলেন মহারাষ্ট্রের গোন্ডিয়ার বাসিন্দা ৩৫ বছরের জগদীশ শ্রীরাম উইকে। এবং অন্যজন ছত্তিশগড়ের রাজনন্দগাঁওয়ের বাসিন্দা ১৭ বছরের এক কিশোর।