গোপন সামরিক তথ্য ফাঁসের আবহে পদত্যাগ করলেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ। দায়িত্ব থেকে সরেছেন তাঁর সহকারী অ্যালেক্স ওয়াংও। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই চর্চা শুরু হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। (আরও পড়ুন: 'আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে মোদীর জন্যে', লাদেন খতমের বার্ষিকীতে বার্তা USA-র)
মাইক ওয়াল্টজ ইস্তফা দেওয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও। স্থায়ী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে নতুন কাউকে নিয়োগ না করা পর্যন্ত তিনিই ওই দায়িত্ব সামলাবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মাইক ওয়াল্টজকে রাষ্ট্রসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ করা হচ্ছে। মার্কিন সেনেট অনুমোদন দিলেই ওয়াল্টজ নয়া দায়িত্ব নেবেন।যদিও কী কারণে আচমকাই দায়িত্ব ছাড়লেন ওয়াল্টজ তা জানা যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ইয়েমেনে মার্কিন হামলার খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন ওয়াল্টজ।
আরও পড়ুন-সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত হতেই খরা পাকিস্তানে? স্যাটেলাইট ইমেজে বিশেষ ইঙ্গিত
বিতর্কের সূত্রপাত গত ২৪ মার্চ। মার্চ মাসে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া 'সিগনাল'-এ ইয়েমেনে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিদের উপর সামরিক হামলার পরিকল্পনা নিয়ে গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। এক গোপন গ্রুপে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা আধিকারিকদের মধ্যে ইয়েমেনে হামলার পরিকল্পনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছিল। সেই গ্রুপচ্যাটে মার্কিন সাংবাদিক তথা 'দ্য আটলান্টিক'-এর সম্পাদক জেফ্রি গোল্ডবার্গকে যুক্ত করেন ওয়াল্টজ।দাবি করা হয়, ভুলবশতই তিনি ওই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে বিতর্ক থামেনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই হামলার খবর 'ফাঁস' হতেই সরগরম হয়ে ওঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি। প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপনীয় তথ্য ফাঁসের জন্য প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথের ইস্তফার দাবিতে সরব হন বিরোধীরা।যদিও প্রতিরক্ষা সচিবের পাশে দাঁড়ান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি স্পষ্ট বলেন, 'পিট খুব ভাল কাজ করছেন। উনি এই বিষয়ে (তথ্য ফাঁস) কিছুই করেননি।' অন্যদিকে, ওই গোপন তথ্য ‘ফাঁস’ বিতর্কের পর ওয়াল্টজ নিজেই ঘটনার কথা স্বীকার করেছিলেন। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, ভুলবশত ওই ঘটনাটি ঘটেছে এবং এর দায়ও সম্পূর্ণ তাঁর। তারপরেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন সময় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই ঘটনা থেকে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা অনেক কিছু শিক্ষা নিয়েছেন বলেও দাবি করেন। কিন্তু বিতর্ক এবং চাপের মধ্যে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে মাইককে বরখাস্ত করা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: 'পাকিস্তানের মাটিতে যে সন্ত্রাসবাদ আছে…', এবার ঘুরিয়ে চড় US ভাইস প্রেসিডেন্টের
দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে হোয়াইট হাউসকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন ট্রাম্প। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে বসিয়েছিলেন মাইক ওয়াল্টজকে। একসময় মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন মাইক ওয়াল্টজ। সেনার বিশেষ বাহিনী গ্রিম বেরেটেরও সদস্যও ছিলেন তিনি। ন্যাশনাল গার্ডের দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি যুদ্ধে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। অবসরের পর রাজনীতিতে যোগ দেন।