মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে মেঘালয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ইন্দোরের দম্পতি রাজা রঘুবংশী ও তাঁর স্ত্রী সোনম। এবার মেঘালয়ের এক ট্যুরিস্ট গাইড পুলিশকে এনিয়ে বড় আপডেট দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত ২৩ মে সোহরা এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার দিন তাঁদের সঙ্গে ছিলেন তিন ব্যক্তি। কয়েকদিন পরে রাজার মৃতদেহ একটি গভীর খাদে পাওয়া যায়, যদিও সোনমের সন্ধান এখনও চলছে।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, তদন্তের অংশ হিসেবে গাইডের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।
ট্যুরিস্ট গাইড কী জানিয়েছেন?
মেঘালয়ের স্থানীয় গাইড অ্যালবার্ট পিদে জানান, ২৩ মে সকালে নংরিয়াট থেকে মাওলাখিয়াত পর্যন্ত তিন হাজারেরও বেশি সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় তিনি আরও তিনজনের সঙ্গে ওই দম্পতিকে দেখেন। 'চারজন পুরুষ সামনের দিকে হেঁটে যাচ্ছিল এবং মহিলা পেছনে ছিলেন। ওই চারজন হিন্দিতে কথা বলছিল, কিন্তু আমি বুঝতে পারছিলাম না তারা কী বলছে, কারণ আমি শুধু খাসি ও ইংরেজি জানি। তিনি আরও জানান যে তিনি একদিন আগে, ২২ শে মে এই দম্পতির সাথে দেখা করেছিলেন এবং তাদের নোংরিয়াটে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তবে তারা তার পরিবর্তে ভা ওয়ানসাই নামে অন্য একজন গাইড নিয়োগ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে তারা শিপাড়া হোমস্টেতে রাত কাটিয়েছিলেন এবং পরের দিন গাইড ছাড়াই ফিরে এসেছিলেন। সেদিন পিডিই যখন মাওলাখিয়াত পৌঁছান, তখন দম্পতির ভাড়া করা স্কুটারটি আর পার্কিং এলাকায় ছিল না। পরে কয়েক কিলোমিটার দূরে সোহরারিমে পরিত্যক্ত অবস্থায় স্কুটারটি পাওয়া যায়, চাবি তখনও লাগানো ছিল।
'ওরা এমনভাবে খুঁজছে যেন মেয়েটা মারা গিয়েছে'
সোনমের ভাই গোবিন্দ, যিনি শিলংয়ে রয়েছেন তল্লাশিতে সাহায্য করতে, রাজ্য সরকারের উদ্ধার প্রচেষ্টার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সোনম বেঁচে আছে।কিন্তু ওরা তাকে মৃতের মতো খুঁজছে,’ তিনি কর্তৃপক্ষকে সিবিআই বা অন্যান্য সংস্থাকে এই তদন্তে নিয়োজিত করার আহ্বান জানান। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমা বলেছেন, সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, 'কোনো প্রকার খামতি রাখা হচ্ছে না। পূর্ব খাসি হিলস জেলার পুলিশ সুপার বিবেক সিয়েম জানিয়েছেন, কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও উদ্ধারকারী দল তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আপনার ছেলেরা গ্যাজেট এবং প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করে বিশ্রাম ছাড়াই যা করতে পারে তা করছে। অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে।
মেঘালয় দম্পতি রহস্য আরও গভীর
একজন এসপির নেতৃত্বে এবং চারজন ডিএসপির সহায়তায় একটি বিশেষ তদন্তকারী দল এই মামলার তদন্ত করছে। এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, স্নিফার ডগ, ড্রোন এবং প্রশিক্ষিত পর্বতারোহী সহ অনুসন্ধান দলগুলি সোনমের খওঁজ চালাচ্ছে। ২ জুন ওয়েইসাওডং জলপ্রপাতের কাছে রাজার পচাগলা দেহ পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর সোনার আংটি ও চেন গায়েব থাকায় নানা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরের দিন, সোহরারিম এবং গিরিখাতের মধ্যবর্তী মাওকমা গ্রামে সোনমের মতো একটি রেইনকোট পাওয়া যায়। এর আগে একটি হোমস্টে থেকে সিসিটিভি ফুটেজে সোনমকে আগের মতো একটি রেইনকোট পরতে দেখা যায়। মাওলাখিয়াত পার্কিং লটে সিসিটিভি ক্যামেরার অভাব রয়েছে এবং পার্ক করা যানবাহনের রেকর্ড রাখা হয় না।
গ্রামের এক প্রবীণ ব্যক্তি সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ওই এলাকার পরিকাঠামো খুবই খারাপ, বিদ্যুতের অবস্থাও নির্ভরযোগ্য নয়। স্থানীয়রা এখন গাড়ির নম্বর এবং দর্শনার্থীদের ফোনের বিশদ ট্র্যাক রাখা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। (পিটিআই ইনপুট সহ)