কপ-২৯ জলবায়ু আলোচনা রবিবার ভোরে শেষ হল আজারবাইজানে। সেখানে উন্নত দেশগুলি জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বার্ষিক ৩০০ বিলিয়ন ডলার দওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও এই পরিমাণ নিয়ে অসন্তুষ্ট উন্নয়নশীল দেশগুলি এবং পরিবেশবিদরা। মনে করা হচ্ছে, উন্নত দেশগুলির এই অনড় অবস্থানের জেরে জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে লড়াই জোর ধাক্কা খেতে পারে। উল্লেখ্য, উন্নয়নশীল দেশগুলি ৬০০ বিলিয়ন ডলারের দাবি জানিয়েছিল। তবে তার আর্ধেক পরিমাণ দিতেই রাজি উন্নত দেশগুলি। (আরও পড়ুন: মার্কিন আদালতের পর এবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে মামলা আদানির বিরুদ্ধে)
আরও পড়ুন: ডিএ নিয়ে বাংলার সরকারি কর্মীদের বড় বার্ত দিতে উদ্যোগী হতে পারেন মমতা! রইল আপডেট
আলোচনার সময় কপ-২৯ সভাপতি উন্নত দেশগুলির প্রস্তাবের চুক্তি সামনে রাখতেই 'বিদ্রোহ' করে ভারত। ভারতীয় অর্থ মন্ত্রকের পরামর্শদাতা তথা কপ-২৯ সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিব করা চাঁদনি রায়না এই নিয়ে বলেন, 'আমরা চরম হতাশ। বিশ্বাস হল সমস্ত কর্মের ভিত্তি। এবং এই ঘটনাটি বিশ্বাসের অভাবের ইঙ্গিত দেয়। জলবায়ুর মতো এই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ ইস্যুতে সহযোগিতার অভাব প্রদর্শন করে এটা। বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী নয়। আর এই চুক্তি নিয়ে আমাদের আপত্তি শুনতে হবে।' চাঁদনি রায়নার এই বক্তব্যকে সমর্থন করে বহু প্রতিনিধি সরব হন। (আরও পড়ুন: ভারতের তেল রফতানি বেড়েছে ৬৩.৭ মিলিয়ন টন, তবে পকেটে ৫.৩ বিলিয়ন ডলার কম ঢুকেছে!)
উল্লেখ্য, কপ-২৯ সম্মেলনে দুই সপ্তাহের দর-কষাকষি চলে। এরপরই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্যে উচ্চ কার্বন নির্গমনকারী উন্নত দেশগুলো ২০৩৫ সালের মধ্যে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি ডলার ব্যয়ের আশ্বাস দিয়েছে। এদিকে কপ-২৯ চুক্তিতে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বিস্তৃত জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্য অর্জনের কথাও রাখা হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি দুই তহবিলই সামিল থাকবে। প্রসঙ্গত, কপ ২৯ এর আসর শুক্রবার শেষ হওযার কথা থাকলেও জলবায়ু তহবিল নিয়ে ২০০ দেশ সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় আলোচনা চলে রবিবার ভোর পর্যন্ত। এক পর্যায়ে উন্নয়নশীল ও দ্বীপদেশগুলোর প্রতিনিধিরা হতাশা ব্যক্ত করে সম্মেলন থেকে ওয়াকআউট করেন। ফসিল জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলো চুক্তি দুর্বল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এর আগে ২০২০ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে ১০ হাজার কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল উন্নত দেশগুলো। বে পরে গিয়ে তা ২০২২ সালে বাস্তবায়িত হয়। সেই ই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালে। এই আবহে নতুন সমঝোতার জন্যে এই আলচোনা শুরু হয়েছিল বাকুতে।
এদিকে কপ-২৯ আলোচনা শেষে জলবায়ু প্রধান সায়মন স্টিল এই চুক্তিকে 'মানব সভ্যতার বিমা' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'এই যাত্রা কঠিন হলেও আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছতে পেরেছি।' তবে ভারতের বক্তব্য, এই চুক্তিতে গ্লোবাল সাউথকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। নাইজেরিয়ার মতো দেশ ভারতের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে এই বিষয়ে।