বাংলাদেশে একের পর এক ক্ষেত্রে সংখ্য়ালঘু নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসছে। এসবের মধ্যে একটা প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশে কি ইসলামি চরমপন্থার খপ্পরে পড়ে গিয়েছে?
তবে এবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা আসবে না। এমনকী তিনি উল্লেখ করেছেন ধর্মের ব্যাপারে বাংলাদেশের তরুণরা খুবই পক্ষপাতহীন। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে।
ইউনুস ওই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আমরা আনন্দিত, অত্যন্ত গর্বিত। সত্যিকারের অর্থেই আমরা বড় একটা পরিবর্তন ঘটিয়েছি। ছাত্রদের কারণেই অভ্যুত্থান ঘটেছে। তখন থেকে আমরা বলছি একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
ওই সংবাদমাধ্যমের বিদেশ বিষয়ক সম্পাদক প্যাট্রিক ফোলিস জানতে চান, বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা ফিরে আসার কিছু ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কর্মকর্তারা। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
এই প্রশ্নের জবাবে ইউনুস জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে না। দেশের তরুণরা খুবই উদ্যমী। ধর্মের বিষয়ে তাঁরা খুবই পক্ষপাতহীন। এই তরুণরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চান।
তিনি বলেন, আসুন আমরা তরুণদের উপর মনোযোগ দিই, বিশেষ করে তরুণীদের উপর। বাংলাদেশের অভ্যত্থানে তরুণীরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের যেকোন তরুণের মতো তাঁরা সামনের কাতারে ছিলেন। আমাদের তরুণ-তরুণীদের ওপর মনোযোগ দেওয়া উচিত। তাঁদের স্বপ্নগুলো যেন পূরণ হয় তা নিশ্চিত করা উচিত। জানিয়েছেন ইউনুস।
বাংলাদেশের ভোটের পরে কী করতে চান এই প্রশ্নের উত্তরে ইউনুস জানিয়েছেন, আসলে আমাকে আমার কাজ থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। জোর করে আমাকে এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে। আমি আমার কাজ করছিলাম তা উপভোগ করছিলাম। এই কারণেই আমি প্যারিসে ছিলাম। আমাকে ভিন্ন কিছু করার জন্য প্যারিস থেকে সরিয়ে আনা হয়। সুতরাং আমার জীবনে সব সময় যে কাজ করেছি উপভোগ করেছি তাতে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব। জানিয়েছেন ইউনুস। জানা গিয়েছে প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে।
এদিকে ভারতের সংসদে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে পাকিস্তানের থেকেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার ঘটনা অনেকটাই বেশি। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বাংলাদেশে এরকম ঘটনার সংখ্যা ছিল ৪৭। পাকিস্তানে সেটা ২৪১ ছিল। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ৩০২টি এরকম ঘটনা ঘটেছিল। আর পাকিস্তানে ঘটেছিল ১০৩টি। আর ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে ২,২০০টি হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। আর অক্টোবর পর্যন্ত পাকিস্তানে সেই সংখ্যাটা ছিল ১১২।