আগামী মাসের অবসর নিতে চলেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তার আগে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তাঁর মেয়াদে গত দু’বছরে বিভিন্ন কাজের অভিজ্ঞতা জনসমক্ষে তুলে ধরলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেছেন, ‘আমি আমার সবটুকু দিয়ে দেশের সেবা করেছি।’ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভুটানের জেএসডব্লিউ স্কুল অফ ল-এর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধান বিচারপতি। সেখানে তিনি বক্তৃতা রাখতে গিয়ে একথা বলেন। একইসঙ্গে, প্রধান বিচারপতি নিজের মত প্রকাশ করে বলেছেন, ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধ গণতন্ত্রের আদর্শকে আরও উন্নত করে।
আরও পড়ুন: ভুয়ো কোর্টরুমে শুনানি, CJI চন্দ্রচূড় সেজে হাতানো হল ৭ কোটি টাকা! আছে বাংলার যোগ
এদিন বক্তৃতার সময় নিজের কার্যকালের মেয়াদে কীভাবে কাজ করেছেন সেই কথা শেয়ার করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘গত দু'বছর ধরে আমি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার পুরোটা যাতে কাজে দিতে পারি সেই প্রতিশ্রুতি নিয়ে জেগেছি। আমি এই সন্তুষ্টির সঙ্গে বিছানায় শুতে যায় কারণ আমি আমার দেশকে সবটুকু দিয়ে সেবা করেছি।’
উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ২০২২ সালের নভেম্বরে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আগামী ১০ নভেম্বর তাঁর অবসর নেওয়ার কথা। এদিনের অনুষ্ঠানে ভুটানের রাজকুমারী সোনম ডেচান ওয়াংচুক এবং দেশের প্রধান বিচারপতি লিয়নপো চোগিয়াল দাগো রিগজিন সহ স্নাতক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্বোধন করে বিচারপতি চন্দ্রচূড় আত্ম প্রতিফলন এবং ব্যক্তিগত বৃদ্ধির গুরুত্বের উপর জোর দেন। তিনি স্নাতকদের উদ্দেশ্যকে উচ্চাকাঙ্ক্ষার চেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গন্তব্যের পরিবর্তে যাত্রায় মনোনিবেশ করতে উৎসাহিত করেন।
এছাড়াও তিনি ভারত ও ভুটানের মতো সমাজের ভিত্তি তৈরি করে এমন ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার এবং সম্মান করার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, এই মূল্যবোধগুলি গণতান্ত্রিক আদর্শের বিরোধিতা করে না বরং তাদের উন্নত করে। তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রায়ই একটি ভুল ধারণা করা হয় যে আমাদের সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধগুলি আধুনিক গণতান্ত্রিক ধারণা যেমন স্বাধীনতা এবং ভিন্নমতের বিপরীত। সেটা ঠিক নয়।
এর পাশাপাশি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি পরিবেশ সুরক্ষায় ভুটানের পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে দেশের সংবিধান পরিবেশগত নীতিকে একটি মৌলিক দায়িত্ব হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এবিষয়ে ভুটানের প্রশংসা করে পরিবেশ সচেতন আইনি পেশাদারদের প্রশিক্ষণের গুরুত্বের উপর জোর দেন। তিনি মনে করেন, ভারতেরও একই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। কারণ বর্তমানে জলবায়ু সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্ব, যা অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলছে।