বাংলাদেশে শিল্প টানতে এবার তুরস্কের প্রতি বার্তা দিল মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন ঢাকা। ঢাকার যমুনাভবনে এদিন তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমের বলাতের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানেই ,তুরস্কের প্রতি বার্তা দিয়ে ইউনুস বলেন, বাংলাদেশের যুব শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তুরস্ক সেদেশে শিল্প গড়ে তুলতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তোলার জন্য তুরস্ককে আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের মাধ্যমে ভারতের মাটিতে নানান ধরনের সামরিক শস্ত্র তৈরি হচ্ছে। এরই মাঝে তুরস্ককে, বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা ইন্ডাস্ট্রি গড়ার ক্ষেত্রে ডাক দিল ঢাকা। বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে সামনে রেখে, সেখানের কর্মশক্তি নিয়ে তুরস্ককে বড় বার্তা দেন ইউনুস। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা বলেন,'আমাদের তরুণদের সুযোগ দিতে আমরা আপনার সহায়তা চাই। এটি আমার দেশের জন্য আপনাদের কাছে আবেদন।'
তুরস্কের প্রতিনিধি দলের প্রতি বার্তায় ইউনুস বলেন,'আমাদের অনেক কিছু করার আছে। কিছু ক্ষেত্রে আমরা আপনার সমর্থন, আপনার প্রযুক্তি এবং আপনার বিনিয়োগ চাই।' বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ার আহ্বান জানিয়ে ইউনুস বলেন,' আপনারা প্রযুক্তির নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আপনারা এখানে প্রতিরক্ষাশিল্প গড়ে তুলতে পারেন। আসুন একটি সূচনা করি, আমরা আপনাদের যে কোনও প্রয়োজনের জন্য প্রস্তুত।' দুই দেশের সম্পর্কের কথা উত্থাপন করে ইউনুস বলেন,'বাংলাদেশ ও তুরস্কের সম্পর্ক অত্যন্ত উষ্ণ। আমরা এটি সব ক্ষেত্রে প্রসারিত করতে চাই।'
অন্যদিকে, পোশাক শিল্পের বাইরেও বাংলাদেশ ও তুরস্কের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা হতে পারে বলে উল্লেখ করে ভারতের প্রসঙ্গ টানেন তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী। অধ্যাপক ড. ওমের বলাত বলেন,' আমরা ভারতের মতো অন্যান্য বাজারগুলোকে প্রতিস্থাপন করতে পারি এবং বাংলাদেশে আমদানি ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারি। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে সব স্তরে সহযোগিতা হতে পারে।' তিনি আভাস দেন, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষাশিল্প, স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধ এবং কৃষি যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সহযোগিতা গড়ে উঠতে পারে। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ও তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা গড়ে তোলার বিষয়টি উত্থাপন করেন। ড. ওমের বলাত বলেন, আমরা বাংলাদেশ ও তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে পারি। উল্লেখ্য, বর্তমানে তুরস্কের প্রায় ২০টি বড় কোম্পানি বাংলাদেশে বস্ত্র ও পোশাক এবং আনুষঙ্গিক পণ্য, রাসায়নিক, প্রকৌশল, নির্মাণ এবং জ্বালানি খাতে বাণিজ্যিক কাজ চালাচ্ছে। প্রসঙ্গত, এর আগে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগানের সঙ্গে ফোনে কথা হয় মহম্মদ ইউনুসের। এরপর গত অক্টোবরে বাংলাদেশে আসে তুরস্কের ৮ সদস্যের দল। এরপর নতুন করে তুরস্কের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মহম্মদ ইউনুস।