বালোচিস্তানের ট্রেন হাইজ্যাক কাণ্ডে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে? তা নিয়ে লুকোচুরি খেলছে পাকিস্তান সরকার। একদিকে বালোচ বিদ্রোহীরা দাবি করে, এই ঘটনায় অন্তত ২০০ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে এবং তারা সকলেই পাক সেনার সদস্য। অপরদিকে সেই সংখ্যা মানতে নারাজ ইসলামাবাদ। যদিও এই হাইজ্যাকের ঘটনা চলাকালীন কোয়েটা রেল স্টেশনে কয়েকশো কফিন নিয়ে আসতে দেখা গিয়েছিল। যা ঘিরে তৈরি হয়েছিল জোর জল্পনা। এই সবের মাঝেই এবার কোয়েটার হাসপাতালের মর্গ থেকে মৃতদেহ নিয়ে চলে গেল বিক্ষুব্ধ পরিবারের সদস্যরা। দ্য ডন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাইজ্যাক কাণ্ডে মৃত অন্তত ৫ জনের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। (আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বিচারপতির বাড়িতে মিলল টাকার পাহাড়, তড়িঘড়ি ডাকা হল কলেজিয়ামের বৈঠক)
আরও পড়ুন: জাতীয় সঙ্গীতের 'অপমান' করার অভিযোগ নীতীশের বিরুদ্ধে, সামনে এল ভিডিয়ো, তোপ RJD-র
এদিকে রিপোর্টে দানানো হয়েছে, বালোচ ইয়াকজেহতি কমিটি বা বিওয়াইসি জোর জবরদস্তি করে মর্গে ঢুকে পড়ে এবং অন্তত ৫টি দেহ সেখান নিয়ে চলে যায়। যদিও সেই সব দেহ তাদের পরিবার সদস্যরা চিহ্নিত করেছে কি না, তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। এদিকে এই ঘটনার ছবি এবং ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, নিজেদের কাছের মানুষের দেহ পেতে কোয়েটার হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়েছেন বহু মানুষ। তারা সেখানে প্রতিবাদ বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, প্রতিবাদী পরিবারের লোকজনের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এর জেরে জখম হন অন্তত ২ জন মহিলা। এছাড়া প্রতিবাদীদের ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। (আরও পড়ুন: হামাস যোগে ধৃত ভারতীয়কে দেশছাড়া করতে পারবেন না ট্রাম্প, নির্দেশ মার্কিন আদালতের)
আরও পড়ুন: ইউনুসের বক্তব্যে না-খুশ, রাত ২টোয় উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ফিরল অগস্টের স্মৃতি
এর আগে স্বাধীনতাকামী বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছিল, পাকিস্তানি সেনা ডাহা মিথ্যা বলছে। হাইজ্যাকে বন্দি থাকা ২১৪ জন বন্দিকে তারা হত্যা করেছে বলে দাবি করল বিএলএ। এর আগে কোয়েটা স্টেশন থেকে কয়েকশো কফিন নিয়ে যাওয়ার ভিডিয়ো সামনে এসেছিল। বিএলএ বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, ট্রেন হাইজ্যাকে নিহত ২১৪ জনের সবাই পাকিস্তানি সেনা সদস্য। উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ বোলান গিরিপথের কাছে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছিনতাই করে বালোচ বিদ্রোহীরা। ট্রেনটিতে অন্তত ৪৫০ জন যাত্রী ছিলেন। সেনাবাহিনী যখন বন্দি যাত্রীদের উদ্ধার করতে যায়, তখন বালোচ বিদ্রোহীদের সাথে লড়াই শুরু হয়। তাতে কমপক্ষে দুই ডজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছিল। একই সঙ্গে ৩৩ জন বিএলএ যোদ্ধাও নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। (আরও পড়ুন: আওয়ামি লিগ ‘আবার ফিরছে’, ঢাকায় বসেই হাসিনার দল নিয়ে বড় কথা খোদ ইউনুসের)
আরও পড়ুন: ISI কর্তাদের পরে বাংলাদেশ যাবেন পাক বিদেশমন্ত্রী, আলোচনা হবে প্রতিরক্ষা নিয়ে
বিএলএ বলে, পাকিস্তান সরকার ডাহা মিথ্যা বলছে। বিএলএ দাবি করেছে যে পাক সরকার তাদের সৈন্যদের নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। বিএলএ বলেছে যে তারা যুদ্ধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোর মধ্যেই তাদের সমস্ত কাজ করেছে। এত সেনার আত্মত্যাগের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিজেরাই দায়ী। বিএলএ বলেছে যে পাকিস্তান সরকার শান্তির জন্য সৈন্যদের ব্যবহার করে না, বরং যুদ্ধ উস্কে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করে।