বাবা সিদ্দিকি খুনের ঘটনায় ধৃত দুই অভিযুক্তের মধ্যে অন্যতম হরিয়ানার বাসিন্দা ২৩ বছরের গুরমেল সিংয়ের বিরুদ্ধে আগেও খুনের অভিযোগ উঠেছে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এর আগে নিজের এক বন্ধুর দাদাকে নৃশংসভাবে খুন করেছিল গুরমেল! ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৯ সালের ৩১ মে, হরিয়ানার কাইথালে অবস্থিত রুদ্রি মন্দিরের কাছে।
উল্লেখ্য, গুরমেলও আদতে এই কাইথাল গ্রামেরই বাসিন্দা। তার প্রতিবেশীরা বলছেন, ২০১৯ সালে নিজেরই এক বন্ধুর দাদা বরফ খোঁচানোর যন্ত্র বা আইস পিক দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছিল গুরমেল! ওই যুবককে সব মিলিয়ে ৫২টি কোপ মেরেছিল সে!
এই নৃশংস ঘটনায় সেদিন হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, এরপর গুরমেলকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাকে বেশ কিছু দিন কাইথাল সংশোধনাগারেও রাখা হয়। কিন্তু, পরে জামিনে মুক্তি পায় সে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ২০১৯ সালের ওই ঘটনার পর হাজতবাস করার সময়েই লরেন্স বিষ্ণোয়ি গ্যাংয়ের সদস্যদের সংস্পর্শে আসে গুরমেল। এবং খুব দ্রুত ওই গ্যাংয়ের শীর্ষস্থানীয়দের নেক নজরে পড়ে যায়।
গ্রামবাসীর অনুমান, সম্ভবত সেই কারণেই জামিন পাওয়ার পর আর কোনও দিন নিজের বাড়িতে থাকতে আসেনি গুরমেল। তারপর থেকেই পাকাপাকিভাবে মুম্বইয়ে থাকতে শুরু করে সে।
দ্য প্রিন্ট-কে ফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাইথালের পুলিশ সুপার রাজেশ কালিয়া জানিয়েছেন, গুরমেল আদতে কাইথাল জেলারই বাসিন্দা। সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে কাইথালের পুলিশ সুপারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাবা সিদ্দিকি খুনের ঘটনায় মুম্বই পুলিশ ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেছে কিনা। জবাবে পুলিশ সুপার জানান, এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।
তবে, গুরমেলের প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মাস ছয়েক আগে গুরমেল একবার গ্রামে এলেও বাড়িতে থাকেনি। তারপর থেকে গ্রামের কেউ অন্তত এলাকায় গুরমেলকে দেখতে পাননি।
এই ঘটনায় ক্ষোভ ঝরে পড়েছে গুরমেলের ঠাকুমা ফুল্লি দেবীর গলায়। তিনি বলেন, 'ওর যদি এখনও আমাদের সামনে দাঁড়াতে লজ্জা না হয়, তাহলে ওকেও রাস্তার মাঝখানে গুলি করে মেরে দিতে পারে। এতে আমাদের কিছুই যাবে আসবে না।' ফুল্লি দেবী আরও জানান, 'আমাদের কাছে গুরমেল অনেক আগেই মৃত। এবং ওর কাছেও আমরা মরে গিয়েছি।'
প্রতিবেশীরা আরও জানিয়েছেন, গুরমেল তার বাবার একমাত্র সন্তান। তার বাবা অনেক দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন। সেই ঘটনার পরই গুরমেলের মা গুরমেলের কাকাকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয়বার বিয়ের পর গুরমেলের মা একটি ছেলে ও একটি মেয়ের জন্ম দেন।