অ্যাভোকাডোর সঙ্গে ভারতীয়দের খুব একটা সখ্য না থাকলেও বিশ্বের নানা দেশের মানুষ তাঁদের রোজের খাবারে এই ফলটি ব্যবহার করেন। বিশ্বায়নের যুগে ভারতে এর ব্যবহার শুরু হলেও এখনও তা একজন আম ভারতীয়ের রোজের খাদ্যতালিকায় অন্তত পৌঁছয়নি। বরং, আমাদের দেশে অ্য়াভোকাডোকে দামি বিদেশি ফল হিসাবেই দেখা হয়।
তথ্য বলছে, অ্য়াভোকাডোর দাম একটু বেশি হলেও এর পুষ্টিগুণ খুব বেশি। যে কারণে - স্যালাড থেকে শুরু করে স্মুদি, টোস্ট স্প্রেড থেকে ডিপ্স এমনকী সুশি - এমন নানা পদে অ্যাভোকাডো ব্যবহার করা হয়। স্বাদবদল করতে ভারতীয়রা আজকাল সেসব মাঝেমধ্য়ে চেখে দেখেন। তাতে অবশ্য কিছুটা বেশিই রেস্ত খসাতে হয়। কিন্তু, তা বলে একটা মাত্র অ্যাভোকাডো টোস্ট খাওয়ার জন্য ১৩,০০০ টাকা দিতে হবে?
রাস্তার দোকানে বিকোচ্ছে ১৩,০০০ টাকার অ্য়াভোকাডো টোস্ট!
এটুকু পড়ে চোখ কপালে উঠলেও আসলে এই ঘটনা সত্যি! এবং সেটা করে দেখিয়েছেন গুজরাটের এক স্ট্রিট ভেন্ডর - মানে যাঁরা রাস্তায় অস্থায়ী দোকানে নানা ধরনের খাবার বিক্রি করেন। তাঁর দাবি, ওই একটা টোস্টেই নাকি বিশ্বের সব দামি-দামি উপাদান ব্যবহার করেছেন তিনি!
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল ১৩,০০০ টাকার অ্য়াভোকাডো টোস্ট!
তেরো হাজারি এই অ্য়াভোকাডো টোস্ট ইতিধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। ফুড ব্লগাররা ওই দোকানে গিয়ে অ্যাভোকাডো টোস্ট তৈরির ভিডিয়ো আপলোড করছেন। যাঁরা সেই বহুমূল্য খাবার চেখে দেখছেন, তাঁদের সাক্ষাৎকারও নিচ্ছেন। তারপর সেসবই ছড়িয়ে পড়ছে সোশাল মিডিয়ায়।
সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে - এই খাবারটি তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিক্রেতা অ্য়াভোকাডোর কুচির মধ্য়ে অলিভ অয়েল, তিল, মশলা, লেবুর রস মাখিয়ে একটি স্প্রেড তৈরি করছেন। যার কোনওটারই দাম খুব বেশি নয়।
যদিও তাঁর দাবি, এই টোস্টে তিনি যে পিউল চিজ ব্যবহার করছেন, সেটিই হল আসল জিনিস! সেই চিজ নাকি কেবলমাত্র সাইবেরিয়ায় পাওয়া যায়। তাই তার অনেক দাম!
পিউল চিজ কি সত্যিই খুব দামি?
হ্যাঁ। এটি অবশ্যই বিশ্বের সবথেকে দামি চিজগুলির মধ্য়ে একটি। যা তৈরি করতে ৬০ শতাংশ পরিমাণে ব্যবহার করা হয় বলকান গাধার দুধ। আর বাকি ৪০ শতাংশ পরিমাণে ব্যবহার করা হয় ছাগলের দুধ।
এই চিজ অত্যন্ত বিরল। কারণ, ১ কিলোগ্রাম চিজ তৈরি করতে বলকান গাধার ২৫ লিটার দুধ ব্যবহার করতে হয়! ফলত, প্রতিবছর মাত্র ৬ থেকে ১৫ কিলোগ্রাম পিউল চিজই উৎপাদন করা হয়। যার জেরে মাত্র ৫০০ গ্রাম চিজেরই দাম পড়ে যায় প্রায় ৫১,০০০ টাকা!
সংশ্লিষ্ট বিক্রেতার দাবি, শুধুমাত্র আমজনতাকে এই বিশেষ চিজের স্বাদ দেওয়ার জন্যই ১৩,০০০ টাকায় অ্যাভোকাডো টোস্ট বিক্রি করা শুরু করেছেন তিনি।
কী বলছে সোশাল মিডিয়া?
বিক্রেতা যে দাবিই করুন না কেন, অধিকাংশ নেট ইউজারই ১৩,০০০ টাকা খরচ করে একটিমাত্র অ্য়াভোকাডো টোস্ট খেতে রাজি নন।
তাছাড়া, প্রশ্ন উঠছে এই খাবারের স্বচ্ছতা নিয়েও। এত দাম দিয়ে যে খাবার কিনে খাওয়া হচ্ছে, সেই খাবার তৈরির সময় হাতে গ্লাভস বা মুখে মাস্ক পরার মতোও বিধিও মানেননি বিক্রেতা। যা যেকোনও দামি রেস্তোরাঁয় মেনে চলা হয়।