বাংলাদেশের বর্তমান কেয়ারটেকার সরকারের কাছে সংস্কারই যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ, তা এত দিনে ভালো মতো স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন অন্তত তেমনটাই দাবি করে এসেছে। এমনকী, সংস্কার সাধন করতে গিয়ে বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন যে ঠিক কবে হবে, সেটাও এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে ঘোষণা করা হয়নি। বদলে একটা লম্বা সময়সীমার আভাস দেওয়া হয়েছে।
আর, এবার সেই সংস্কারের দোহাই দিয়েই স্থগিত করে দেওয়া হল 'বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস' (বিসিএস)-এর পরবর্তী লিখিত পরীক্ষা! যদিও তার নেপথ্যে কিছু সংখ্যক পড়ুয়ার অনশন আন্দোলনের প্রভাব রয়েছে বলেই দাবি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম অনুসারে - ভারতের প্রতিবেশী এই দেশে সরকারি চাকরির পরীক্ষা ও নিয়োগের জন্য যে নিয়ামক সংস্থা রয়েছে, সেই 'বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন' (বিপিএসসি)-এর সংস্কারের দাবিতে সরব হয়েছেন পড়ুয়াদের একটা অংশ। এমনকী, মোট আটদফা সংস্কারের দাবিতে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন অনশনেও বসেন।
গতকাল (রবিবার - ২৭ এপ্রিল, ২০২৫) সেই অনশন তুলতে আসেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। সেই সময়েই তিনি ঘোষণা করেন, আগামী ৮ মে থেকে ৪৬তম বিসিএস-এর লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও আপাতত তা স্থগিত করা হচ্ছে। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে অনশন প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা। ঘটনাটি ঘটে স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪৫ মিনিট নাগাদ।
আসিফ এই প্রসঙ্গে আরও জানান, 'শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবির বিষয়ে জ্বালানী উপদেষ্টা ফাওজুল কবীর খানকে প্রধান করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি করা হয়েছে। পিএসসি-র দীর্ঘমেয়াদী সংস্কারের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও গঠিত কমিটি আলোচনায় বসবে।... দ্বিতীয় আরও একটি পিএসসি গঠন ও আরও কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। আমরা বিশ্বাস করি, আগামী দিনে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।'
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অনশন আন্দোলন শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন পড়ুয়া। প্রাথমিকভাবে তাঁরা তিন দফা দাবিতে অনশন শুরু করলেও পরে তা বাড়িতে আট দফা সংস্কার চাওয়া হয়। পরবর্তীতে এই আন্দোলনে যোগ দেন আরও এক পড়ুয়া। এরপর আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে কর্মসূচিতে যোগদান করে আরও অনেক চাকরিপ্রার্থী।
এর পাশাপাশি, সংস্কারের দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলনকারীরা একাধিকবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহবাগ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। রবিবারও তাঁদের পক্ষ থেকে শাহবাগ অবরোধ করা হয়।