ভারতের অধিকাংশ মানুষের ঘাড়েই ঝুলছে বন্যায় ভিটেহীন হওয়ার আশঙ্কা। সম্প্রতি এমনটাই জানা গেল একটি সমীক্ষা থেকে। ইদানীং উত্তর ভারত জুড়ে বিপুল বৃষ্টির জেরে রীতিমতো বন্যার পরিস্থিতি। রাজধানী দিল্লির ভাসমান অবস্থাও রোজ খবরের শিরোনামে উঠে আসছে। এই সবের মধ্যেই বন্যার আশঙ্কা নিয়ে জরুরি পরিসংখ্যান প্রকাশ করল কাউন্সিল অব এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার। পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ভারতের ৭২ শতাংশ জেলাই বড় আকারের বন্যায় বিপর্যস্ত হতে পারে। এমনকী বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বন্যার পূর্বাভাসের ব্যবস্থাও উন্নত মানের নয় বলে জানিয়েছে কাউন্সিল। এর ফলে হঠাৎ করে বন্যা হলে বড় সংখ্যায় প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। কাউন্সিলের রিপোর্ট মোতাবেক, সারা দেশের মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে বন্যার পূর্বাভাস উন্নত মানের। যে তালিকায় অধিকাংশ শহরই নেই বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: সিগারেট খেলেই হাঁ করে চেয়ে থাকুন মুখের দিকে! কেন এই নির্দেশ জারি হল হংকংয়ে
আরও পড়ুন: মানুষের পক্ষে থাকাই মুশকিল! করাচি নিয়ে কেন এমন রিপোর্ট দিল খোদ পাক সংবাদমাধ্যম
প্রসঙ্গত, অতিমাত্রায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে আসাম, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা ও সিকিমে। তবে এই রাজ্যগুলিতে বন্যার পূর্বাভাস দেওয়ার পদ্ধতিও বেশ উন্নত। এই রাজ্যগুলিতে ফ্লাড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম বা ইডব্লিউএস উন্নত বলে প্রাণহানির আশঙ্কা কম। বর্তমানে হিমাচল প্রদেশ ভয়ঙ্কর বন্য পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। বন্যার পূর্বাভাস দেওয়ার পদ্ধতির নিরিখে ওই রাজ্য রয়েছে সবচেয়ে নিচে। অন্যদিকে, আরেক রাজ্য উত্তরাখণ্ডের অবস্থা বিপরীত। সেই রাজ্যও যথেষ্ট বন্যাপ্রবণ। কিন্তু বন্যার পূর্বাভাস দেওয়ার পদ্ধতিও বেশ উন্নত সেখানে। অন্যদিকে আলোচনার শীর্ষে থাকা দিল্লিতেও বন্যার পূর্বাভাস দেওয়ার পদ্ধতি মাঝারি মানের। কিন্তু যমুনার কারণে এই অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে।
সাম্প্রতিক ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ভারতের ৬৬ শতাংশ নাগরিকই প্রবল বন্যার মুখে পড়তে পারেন। অনুন্নত পূর্বাভাস ব্যবস্থার কারণে প্রাণহানি থেকে ভিটেমাটিহীন হওয়ার আশঙ্কাও যথেষ্ট রয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ৩৩ শতাংশ আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমের সুবিধা পান। অর্থাৎ দুই তৃতীয়াংশ মানুষ বন্যার বিপদে দিন কাটান। যার মধ্যে এক তৃতীয়াংশ মানুষ শুধু আগে থেকে পূর্বাভাস পান। বন্যার পাশাপাশি এই দিন সাইক্লোন ঝড়ের কথাও বলা হয় ওই সমীক্ষায়। পরিসংখ্যান বলছে, দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ ভয়াবহ সাইক্লোন ঝড়ে বিপর্যস্ত হতে পারে। তবে এই বিপর্যয়ের খবর আগে থেকে ১০০ শতাংশ মানুষই পান। ফলে সেইমতো ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব হয়।