সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু জট খুলতে নেমে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের মুখে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এই মৃত্যু সুইসাইড না হোমিসাইড? সুশান্তের মৃত্যুকে শুরু থেকেই আত্মহত্যার ঘটনা বলে দাবি করে এসেছে মুম্বই পুলিশ। তবে এই মৃত্যুর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা সবরকম দিক খতিয়ে দেখছে সিবিআই। সুশান্তের মৃত্যুর ময়না তদন্তের রিপোর্ট থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে তদন্তকারীদের মনে, সেইসব রহস্যের সমাধান হলে তবেই এই মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি এর সঙ্গে কোনও ফাউল প্লে জড়িয়ে রয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবে সিবিআই। এই মামলায় বৃহস্পতিবার সুশান্ত সিং রাজপুত এবং রিয়া চক্রবর্তীর সাইকো থেরাপিস্ট সুজন ওয়াকারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিআরডিও গেস্ট হাউজে ডেকে পাঠাল সিবিআই। এদিন দুপুর ১টার কিছু সময় পর সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের মুম্বই খাঁটিতে হাজির হন এই সাইকো থেরাপিস্ট। এই মামলায় গতমাসে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে জড়িয়েছিলেন এই সাইকো থেরাপিস্ট। সাংবাদিক বরখা দত্তকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে সুশান্তের মৃত্যু মামলা নিয়ে মুখ খোলেন সুজন ওয়াকার। সেখানে তিনি বলেন,'বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ছিলেন'। তিনি বলেন ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে রিয়া সুশান্তকে নিয়ে তাঁর কাছে এসেছিলেন মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পরামর্শ নিতে। রিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে তিনি মন্তব্য করেন, 'রিয়া, পার্টনার হিসাবে সুশান্তকে মানসিক ভাবে সাহস দিয়েছেন, এইভাবে তাঁকে হেনস্থা করা নিম্নরুচির পরিচয়'। সঠিক তথ্যটা জনতার কাছে তুলে ধরতেই এই সাক্ষাত্কার তিনি দিচ্ছেন বলে দাবি করেন। মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে মিডিয়ার দায়িত্বজ্ঞানহীন কভারেজকেই দায়ী করে সুজান বলেছেন - মানসিক স্বাস্থ্য একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মিডিয়া যেভাবে সুশান্তের মৃত্যুর বিষয় পরিবেশন করছে তাতে তিনি খুবই হতাশ। জনসাধারণের কাছে আসল তথ্য তুলে ধরা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।তবে সুজনের এই মন্তব্য ঘিরে কমবিতর্ক হয়নি। একাধিক আইনজীবী দাবি করেন, এটা মেডিকাল পেশার আইন বিরুদ্ধ কাজ। কেউ কোনও রোগীর মৃত্যুর পরেও তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য পাবলিক প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করতে পারেন না, এই অধিকার কোনও চিকিত্সকের নেই। সুশান্ত ভক্তরা তো প্রমাণ সহ দাবি করেন সুজন ওয়াকারের কোনও মেডিকাল ডিগ্রি নেই। তিনি কোনও সাইকোলজিস্ট নন, সাইকো-থেরাপিস্ট মাত্র। তিনি সাইকোলজিতে এম এ করেছেন লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে। কীভাবে তিনি সুশান্তকে বাইপোলার ঘোষণা করলেন? ১৪ জুন সুশান্তের মৃত্যুর পরেই মুম্বই পুলিশ জানিয়েছিল ক্নিনিক্যাল ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন সুশান্ত। মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত থাকার কারণেই আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা, তেমনই তত্ত্ব খাড়া করেছিল মুম্বই পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৯-এর নভেম্বর থেকে ২০২০-র জুন পর্যন্ত চারজন সাইকোলজিস্ট এবং একজন সাইকো থেরাপিস্টের পরামর্শ নিয়েছিলেন সুশান্ত। এই মামলায় আগেই করসি চাভরার সঙ্গে কথা বলেছে সিবিআই। এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের প্রশ্নের মুখে সুজন।