সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুতে শোকাহত ও স্তম্ভিত পটনায় তাঁর শৈশবের স্কুলের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা। তাঁর আত্মহত্যায় এক বিশাল শূন্যতা তৈরি হয়েছে তাঁদের জীবনে।
২০০১ সালে পটনার সেন্ট ক্যারেন’স হাই স্কুল থেকে পাশ করে বের হন সুশান্ত সিং রাজপুত। ছোট থেকেই তাঁকে এক উজ্জ্বল ছাত্র হিসেবে মনে রেখেছেন স্কুলের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা।
ভিড়ের মধ্যে একনজরেই তাঁকে আলাদা করে চিনে নেওয়া যেত বলে দাবি শিক্ষকদের। শুধু নিজে মেধাবী হয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি, পাশাপাশি সহপাঠীদের উদ্বুদ্ধ করতেও সুশান্ত অনবদ্য ভূমিকা পালন করতেন বলে স্মৃতিচারণ করছেন শিক্ষকবৃন্দ।
ছাত্র সুশান্তকে এখনও খুব ভালো করেই মনে রেখেছেন স্কুলের বর্তমান অধ্যক্ষ সেই সময়কার সহ-অধ্যক্ষ সীমা সিং। রবিবার সকালে প্রিয় ছাত্রের আত্মঘাতী হওয়ার খবরে ভেঙে পড়েছেন তিনি। স্মৃতি রোমন্থন করে জানালেন, ‘এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যে ও আর নেই। সব সময় হাসিখুশি থাকত আর পড়াশোনার সঙ্গে খেলাধুলোতেও খুব ভালো ছিল। কোনও কিছুতে সহজে হাল ছাড়ার ছেলে ও ছিল না।’
অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ছাত্রদের এখনও সুশান্তের উদাহরণ দেন। ‘সেন্ট ক্যারেন’স-এর ছাত্রদের জন্য উদাহরণ গড়ে দিয়েছিল সুশান্ত। বড় স্বপ্ন দেখতে ও উদ্বুদ্ধ করত চিরদিন। অসম্ভবকে সম্ভব করার গুণ ছিল ওর মধ্যে। এই অভাব অপূরণীয়।’
সুশান্তের প্রাক্তন হিন্দির শিক্ষিকা সুনীতি বাহাদুর বলেন, ‘আমি সুশান্তকে নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়িয়েছি। ভাবতেই পারছি না, যে ছেলেটা সবাইকে হাসাত আর মনে জোর এনে দিত, সে এ রকম কিছু করেছে।’
সেন্ট ক্যারেন’স-এর আর এক প্রাক্তন ছাত্রী, যিনিও বলিউডে পা রেখেছেন সুপার ৩০ ছবির সুবাদে, সেই দীপালি গৌতম বলেন, ‘এ আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি। সব সময় ওকে সম্মান করতাম আর ওর পদাঙ্ক অনুসরণ করতাম। যখন ভেঙে পড়েছি, ওর কথা ভেবেই মনে জোর এনে আবার লড়াইয়ের শক্তি সঞ্চয় করেছি।’
তিনি জানিয়েছেন, ‘যখন বলিউডে প্রথম পা রাখি, শুধু ওর স্কুলে পড়েছি বলেই ওর পরিচিত সেলেবরা আমায় গুরুত্ব দিয়েছেন।’
দীপালি জানিয়েছেন, ছবির শ্যুটিংয়ের সুবাদে একবার এক অনুষ্ঠানে সুশান্তের সঙ্গে তাঁর দেখা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সময়ের অভাবে সুশান্ত আসতে পারেননি। যদিও সেই অনুষ্ঠানের আয়োজক পরে তাঁর সঙ্গে সুশান্তের দেখা করিয়ে দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই দিন আর কখনও আসবে না।’ কথা শেষ করার আগেই কেঁদে ফেলেন দীপালি।