টেলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মধুবনী গোস্বামী। আপাতত অভিনেত্রীর ছেলের বয়স চার। যদিও অভিনয় থেকে এখনও বিরতিতে তিনি। তবে নিজের পার্লারের ব্যবসা ও ভ্লগিং করেন নিয়মিত। তবে মাঝে মাঝেই তাঁকে নানা কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়। বিশেষ করে, সন্তানের জন্য কেরিয়ার ছাড়া, তাঁর সাজ ইত্যাদি নিয়ে মাঝে মাঝেই ট্রোলের শিকার হতে হয় অভিনেত্রীকে। আর এবার চওড়া শাঁখা-পলা পরার চল তিনি এনেছেন দাবি করাতে ফের তুলোধনা করলেন নেটিজেনরা।
মধুবনী পোস্টে কী লেখেন?
নায়িকা তাঁর চওড়া শাঁখা-পলা পরা একটি ছবি সমাজমাধ্যমের পাতায় পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘মোটা মোটা শাঁখা পলা পরার চল আমি নিয়ে এসেছি, বললেই চলে। ২০১৬-য় যখন বিয়ে হয়, তখন মোটা শাঁখা পরেই বিয়ে করেছিলাম। তারপর দেখেছিলাম, অনেকেই মোটা শাঁখা পরছেন। দেখে খুব ভালো লেগেছিলো। সে যাক, শাঁখা পলা পরাই যেখানে উঠে গিয়েছিল, সেখানে ‘স্টাইল’ করার জন্য হলেও, লোকে তো পরছেন এটাই অনেক। এরপর অনেক পরে যখন মোটা শাঁখার সঙ্গে মোটা পলাও পরা শুরু করলাম, তখন লোকে সেটাও ফলো করলো। আমি সব রকম আউটফিটের সঙ্গেই শাঁখা পলা পরি, আমার এখনকার এই সোনালি চুলের সঙ্গেও পরছি!'
আরও পড়ুন: 'আমি নগ্ন ছিলাম, আর আপনি লজ্জা পাচ্ছিলেন?' ববিতে ঋষি কাপুরের সঙ্গে সাহসী দৃশ্য প্রসঙ্গে অরুণা
তিনি আর লেখেন, ‘অনেকে আমায় জিজ্ঞেস করেন, আমি কেন শাঁখা পলা পরি? আমি পরি আমার স্বামীর মঙ্গল কামনায়। স্বামীর শারীরিক এবং মানসিক সুস্বাস্থ্যের কামনায়। এটা আমার বিশ্বাস। সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকেই আমি পরি। আর একটা কথা। আমি মনে করি, শাঁখা পলা, সিঁদুর এগুলো এমন আভূষণ, যা চাইলেই পরা যায় না। এর জন্য, অবশ্যই প্রাথমিক ভাবে বিয়ে হওয়াটা প্রয়োজন। স্বামীর দেহ থাকাটাও অত্যাবশ্যক। যারা প্রফেশনের কারণে পরতে পারেন না, তাদেরটা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য। কিন্তু ‘এমনি পরি না’, বা ‘দেখতে গাঁইয়া লাগে’ ভেবে যাঁরা পরেন না, তাঁদের অন্তত এটুকু মাথায় রাখা উচিত, যে এমন অনেকে আছেন, যাঁরা এগুলো পরার সুযোগই পান না। পুনশ্চ- আমি কাউকে আমার কথা মেনে চলতে বলছিনা। আমি তেমনটা আশাও করি না। আমি শুধু আমার দিকটা সবার সঙ্গে শেয়ার করলাম।'
আর তিনি এই পোস্ট করার পরই ফের তাঁর দিকে ধেয়ে আসে নানা নেতিবাচক মন্তব্য। একজন লেখেন, ‘তুমি লিখেছো, তোমাকে দেখে চওড়া শাঁখা পলা শিখেছে।আমার বিয়ে হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। ঘোমটা, সিঁদুর, আলতা, চওড়া শাঁখা-পলা পরতাম শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায়। আমার শাঁখা বাড়তো না। তবুও প্রত্যেক মহালয়ায় নতুন কাজের শাখার শখ ছিল। প্রতি বৃহস্পতিবার আলতা পরা। এগুলো নিয়ম নয়। অন্যকে দেখানো নয়। আমার ভালোবাসা।’ আর একজন লেখেন, ‘Perspective bolle ‘উচিত’ কথাটা আসেনা! আপনি উচিত অনুচিত বলার কেউ নন! আপনার ভালো লাগে, আপনি পরুন, আপনার বিশ্বাস আপনি মানুন! অযথা উচিত বলে লোকের মনে আপনার বিশ্বাস ঢুকিয়ে দেবেননা!'
আরও পড়ুন: 'আমি প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা কাজ করি…', দীপিকার ৮ ঘণ্টা শিফটের দাবি নিয়ে মুখ খুললেন জেনেলিয়া!
আর একজন লেখেন, ‘দিদি বুঝে গেছেন controversy post মানেই রিচ, আর রিচ মানেই ফেসবুকের ডলার। তা আপনার বিশ্বাস, ইচ্ছা শেয়ার করছেন খুব ভালো কথা। কিন্তু অন্যের ইচ্ছাকেও সম্মান করতে শিখুন। কারোর ইচ্ছা নাই হতে পারে শাখা পলা পরার, আপনি জাজ করার কেউ না!’ আর একজন লেখেন, ‘প্রথমত মোটা শাঁখা পলার চল আপনি আনেননি। আমি আমার দিদাকেও পরতে দেখেছি। দিদা বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স হত আশি। সুতরাং সময়টা খুব সহজে অনুমেয়। দ্বিতীয়ত সবাই চাইলেও পরতে পারে না? কেন? শাঁখা দিয়ে, পলা দিয়ে আজকাল অনেক ডিজাইনের গহনা হচ্ছে সেগুলো সবাই পরতে পারে। শাঁখা পলাতে কারুর পেটেন্ট বসানো নেই। তৃতীয়ত স্বামীর দেহে থাকা জরুরি মানে তাঁর বেঁচে থাকা। ননসেন্স পোস্টে আমি কমেন্ট করি না কিন্তু এই বাক্যটার জন্য করলাম, আপনি আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এত শাস্ত্র এত আধুনিক বুলি আওড়ে এই ধরনের মন্তব্য করেন কী করে! স্বামীর দেহে থাকা তাঁর না থাকার জন্য কি স্ত্রীরা দায়ী নাকি, তাঁরা চলে গেলে সতীদাহ প্রথায় তাঁদের জন্য বরাদ্দ। কে কী পরবে কে কীভাবে চলবে সেটা প্রত্যেকের নিজস্ব ব্যাপার। আর যাঁরা পরেন না বেশ করেন! আপনি শাঁখা পলা পরবেন বা চুলে রং করবেন সেটা যেমন আপনার চয়েস, অন্যের চয়েসকেও সম্মান করতে শিখুন। আপনি তাঁদের জাজ করার কেউ নন। আর জাজ করতে এলে নিজেকেও জাজ হতে হবে সেটা ভেবে নিয়ে পরবর্তী হ্যাজ নামাবেন।’