সংগীতের জগতে ‘ভগবানের আসন’-এ বসানো হয় বর্ষীয়ান গায়িকা আশা ভোঁসলেকে। শুধু তাই নয়, এখনও তাঁর গলায় মা সরস্বতীর বাস। তবে সম্প্রতি তাঁকে চিন্তাপ্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে আজকের সমাজে যেভাবে ডিভোর্স বাড়ছে তা নিয়ে। ধর্মগুরু রবি শঙ্করের সঙ্গে কথা বলার সময়, আশাকে চিন্তা প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলতে দেখা যায়, কেন আজকের ছেলে-মেয়েরা একটুতেই ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেয়। কেন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে না আর সেভাবে!
অবশ্য আশার ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পর্ক একসময় ছিল বলিউডের চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে। কিশোরী আশা নিজের থেকে বয়সে প্রায় দ্বিগুণ, দিদি লতার সেক্রেটারির হাত ধরে পালিয়েছিলেন! ৩১ বছরের গণপত ভোঁসলের সঙ্গে, নিজের ছোট বোন আশার বিয়ে মানতে পারেননি লতা সেই সময়। ফলে মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়েছিল।
প্রথম বিয়ে থেকে তাঁর ৩ সন্তান হয়। এই তৃতীয় সন্তানের জন্মের আগেই গণপত ভোঁসলের ঘর ছাড়েন তিনি। সেটা ১৯৬০ সাল। এর বছর পাঁচ পর মারা যান গণপত। ১৯৮০ সালে দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন আশা। বিয়ে করেন আরডি বর্মনকে। তবে এই বিয়ে থেকে কোনো সন্তান ছিল না তাঁর। দুজনেরই এটা ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। তবে শেষ সময়, একসঙ্গে থাকতেন না আরডি বর্মন ও আশা।
আশাকে রবি শঙ্করের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রকাশ করেন, স্বামীর সঙ্গে শত সমস্যা থাকলেও, তিনি কখনো ডিভোর্স নেওয়ার কথা ভাবেনওনি। ‘আজকাল শুনি দম্পতিরা প্রতি মাসেই নাকি ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিচ্ছে।’, রবিশঙ্কর সম্মত হন, উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে মানুষের মধ্যে সহনশীলতার মাত্রা হ্রাস পেয়েছে।
আশাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আমি আমার জীবনের বেশিরভাগটা সময় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়েছি। অনেক লোককে দেখেছি। তারা বর্তমান প্রজন্মের মতো এমন কঠোর পদক্ষেপ নিত না হুট করে। আমি অনুভব করি, আজ যেন প্রেম খুব জলদিই শেষ হয়ে যায়। তাঁরা খুব দ্রুতই একে-অপরের উপর বিরক্ত হয়। সম্ভবত এটাই একটি প্রধান কারণ (ডিভোর্সের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার)।’
শুধু তাই নয়, মাতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আশা। বলতে শোনা যায়, ‘আজকাল নারীরা সন্তান ধারণকে বোঝা মনে করে। সমাজের নিম্ন স্তরে শুধু নয়, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত স্তরেও আজকাল এই ছবিই দেখা যাচ্ছে। আমি মাত্র ১০ বছর বয়সে প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলাম। কাজ করতে করতেই ৩ সন্তানের জন্ম দিয়েছি। ওদের বড় করেছি। ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। এখন আমার নাতি-নাতনি রয়েছে। দিনরাত কাজ করেছি। তবুও, আমি আমার বাচ্চাদের, তাদের পড়াশোনার দেখভাল করেছি।’