পশ্চিমবঙ্গের মোট ৬৯৬টি বুথে পুনর্নিবার্চন হতে চলেছে। রবিবার রাতের দিকে রাজ্য নির্বচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার ওই বুথগুলিতে পুনর্নির্বাচন হবে। সকাল সাতটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট দিতে পারবেন মানুষ। কমিশনের তরফে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর জেলা মুর্শিদাবাদে সর্বাধিক ১৭৫টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে। তালিকায় দুই নম্বরে আছে মালদা। সেখানে পুনরায় ১০৯টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে জেলা থেকে সংসদ, সেই জেলায় ৩৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন হতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর 'গড়' পূর্ব মেদিনীপুরের ৩১টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
আরও পড়ুন: WB Panchayat election Latest News: মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে দিল্লি যাচ্ছি, বলে বিমানে উঠলেন রাজ্যপাল
শনিবার পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার ছবি ধরা পড়েছে। স্রেফ ভোটের দিনেই কমপক্ষে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন প্রান্তে ছাপ্পার অভিযোগ উঠেছে। সেই পরিস্থিতিতে রাজ্যের ৬৯৭টি বুথে পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা করা হয়েছে। ভোটের দিন যে মুর্শিদাবাদে সর্বাধিক চারজনের মৃত্যু হয়েছে, সেই জেলায় সর্বাধিক বুথে ফের ভোট হবে। আবার শনিবার তিনজনের মৃত্যুর সাক্ষী থাকা জেলা মালদায় ১০৯টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে বলে জানানো হয়েছে। সার্বিকভাবে ৬১,৬৩৬ বুথের মধ্যে ৬৯৬টি বুথে ফের ভোটগ্রহণ হবে। সূত্রের খবর, সোমবার সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে।
কোন জেলার কত বুথে পুনর্নির্বাচন হবে?
১) ঝাড়গ্রাম: কোনও বুথে পুনর্নির্বাচন হবে না।
২) পুরুলিয়া: চারটি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে।
৩) নদিয়া: ৮৯টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে।
৪) মুর্শিদাবাদ: ১৭৫টি বুথে ফের ভোটগ্রহণ হবে।
৫) পশ্চিম মেদিনীপুর: জেলার ১০টি বুথে ফের ভোট হবে।
৬) বীরভূম: ১৪টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে।
৭) জলপাইগুড়ি: ১৪ টি বুথে ফের ভোটগ্রহণ হবে।
৮) উত্তর ২৪ পরগনা: ৪৬টি বুথে পুনরায় ভোটগ্রহণ হবে।
৯) আলিপুরদুয়ার: একটি বুথে ফের ভোটগ্রহণ হবে।
১০) হাওড়া: আটটি বুথে পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা করা হয়েছে।
১১) দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ৩৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে।
১২) কালিম্পং: কোনও বুথে পুনর্নির্বাচন হবে না।
১৩) দার্জিলিং: কোনও বুথে পুনর্নির্বাচন হবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
১৪) পূর্ব মেদিনীপুর: ৩১টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে।
১৫) কোচবিহার: ৫৩টি বুথে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৬) উত্তর দিনাজপুর: ৪২টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে।
১৭) দক্ষিণ দিনাজপুর: ১৮টি বুথে ফের ভোটগ্রহণ হবে।
১৮) মালদা: ১০৯টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে।
১৯) পূর্ব বর্ধমান: তিনটি বুথে ফের ভোট হবে।
২০) পশ্চিম বর্ধমান: তিনটি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে।
২১) বাঁকুড়া: আটটি বুথে ফের ভোটগ্রহণ হবে।
২২) হুগলি: ২৯টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে।
তারইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বয়ক ভাস্কর ঘোষ বলেছেন, ‘গতকাল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ইলেকশন কন্ট্রোল রুম থেকে যেসব অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছিল, তথ্য-সহ সেইসব বুথে যদি পুনর্নির্বাচন না হয়, তাহলে সমস্ত তথ্য এবং সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে চেয়ে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব। আমরা ভোটকর্মী হিসেবে যারা বুথের ভিতর থেকে সমস্ত বিষয়টা দেখেছি, তাদের অমান্য করে যদি কমিশন নিজের মতো করে নির্বাচন করে এবং সেখানে যদি পক্ষপাতিত্ব হয়, তার বিরুদ্ধে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ লড়াই করবে। আমরা চাই নির্বাচনের নামে এই প্রহসন বন্ধ হোক।’