অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের একটা কথাই প্রযোজ্য। তা হল 'ওয়ান ম্যান আর্মি।' হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। এক এক করে যখন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা ফিরে যাচ্ছে। আফগানিস্তান ম্যাচ জয়ের একেবারে দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে, ঠিক তখনই দলের পাশে দাঁড়ালেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। একাই দলকে টেনে নিয়ে গেলেন। আফগান বোলারদের তোয়াক্কাই করেননি তিনি। ক্রিজে ধরে থেকে দলকে জেতালেন তিনি। সাত উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও দলকে টেনে নিয়ে গেলেন তিনি। শুধু তাই নয় করলে দ্বিশতরানও। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এমন ইনিংস এর আগে ঘটেছে বলে কেউ মনে করতে পারছে না।
পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের শুরুটা ভালো না হলেও, শেষটা করে দিয়ে এলেন ম্যাক্সি। কথা আছে, শেষ ভালো যার, সব ভালো তাঁর। এবং বাংলা প্রবাদ বাক্য একেবারেই মিলে গেল অস্ট্রেলিয়ার জন্য। একা বিপক্ষকে শেষ করে দিয়ে এলেন তিনি। ২৯২ রানের টার্গেট মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে নামলে মাত্র ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ জয়ের গন্ধে মশগুল হয়ে যায় আফগানরা। সেখান থেকে লড়াটা শুরু। আফগান বোলারদের দাপট থামিয়ে একেরপর এক শট মাঠের বাইরে পাঠাতে থাকেন তিনি।
পায়ে টান ধরলেও দলকে বিপদের মুখে ফেলে ছেড়ে যাননি। মাত্র ১২৮ বলে করেন ২০১ রান। তাঁর এই ইনিংসটি সাজানো ছিল ২১টি বাউন্ডারি এবং ১০টি ওভার বাউন্ডারির সৌজন্যে। আফগানদের মুখ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে আসেন এই অজি তারকা। তাঁর এই ইনিংস বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে রান তাড়া করতে নেমে সর্বোচ্চ রান করেছেন। এই তালিকায় এতদিন সবার প্রথমে ছিলেন ইংল্যান্ডের অ্যান্ড্রু স্ট্রাস। যিনি ২০১১ সালে ভারতের বিরুদ্ধে ১৫৮ রান করেন তিনি। এবার প্রাক্তন ইংল্য়ান্ড তারকাকে পিছনে ফেলে দিলেন ম্য়াক্সি। এদিন তিনি করলেন ২০১ রান। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ডেভন কনওয়ে। তিনি এই বিশ্বকাপেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই রান করেন।
শুধু তাই নয়, ম্যাক্সওয়েল ভাঙলেন কপিল দেবের রেকর্ডও। ৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সর্বোচ্চ রানের মালিক হলেন এই অজি ব্যাটার। এতদিন ওডিআই ক্রিকেটের ইতিহাসে সবার প্রথমে ছিলেন কপিল দেব। ১৯৮৩ সালে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ১৭৫ রান করেন তিনি। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন লুক রঞ্চি। যিনি শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে অপরাজিত ১৭০ রান করেন।
শুধু তাই নয়, ওডিআইতে রান চেজ করতে নেমে প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে প্রথম কোনও ক্রিকেটার দ্বিশতরান করলেন। একদিন সবচেয়ে বেশি রান ছিল পাকিস্তানের ফখর জামানের। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জোহানেসবার্গে ১৯৩ রান করেন। শেন ওয়াটসন অপরাজিত ১৮৫ রান করেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে। মহেন্দ্র সিং ধোনি শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে অপরাজিত ১৮৩ রান করেন ২০০৫ সালে। বিরাট কোহলি রয়েছেন পঞ্চম স্থানে। তিনি ২০১২ সালে মীরপুরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৮৩ রান করেন।