টি-২০ বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়ার জন্য শূন্য থেকে লড়াই শুরু করতে হতো রিঙ্কু সিংকে, এমনটা নয় মোটেও। বরং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবের পর থেকে রিঙ্কু যে রকম প্রভাব রাখেন জাতীয় দলের পারফর্ম্যান্সে, তাতে বিশ্বকাপের স্কোয়াড গড়ে নিতে বসে জাতীয় নির্বাচকরা বিবেচনা করতে বাধ্য রিঙ্কু সিংয়ের নাম। শুধু দরকার ছিল আইপিএলের কয়েকটি বড় ইনিংস। তাহলেই অজিত আগরকরদের উপরে চাপ বাড়াতে পারতেন রিঙ্কু।
অথচ বিশ্বকাপের দল নির্বাচনের আগে পর্যন্ত চলতি আইপিএলে বড় ইনিংস খেলার তেমন একটা সুযোগই পেলেন না রিঙ্কু সিং। ফলে বাকিদের ভিড়ে হারিয়ে যেতে হল নাইট রাইডার্সের তারকা ক্রিকেটারকে। ঋষভ পন্ত, সঞ্জু স্যামসনরা আইপিএলের পারফর্ম্যান্স দিয়েই বাজিমাত করলেন। যুজবেন্দ্র চাহাল বিশ্বকাপের স্কোয়াডে ঢুকে পড়লেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগে নজর কেড়ে। সেখানে যোগ্য দাবিদার হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়তে হয় রিঙ্কুকে।
বিশ্বকাপের দলে রিঙ্কুর জায়গা না হওয়ায় টুকিটাকি সুর চড়াতে দেখা যাচ্ছে নাইট টিম ম্যানেজমেন্টকে। তবে রিঙ্কুর বাদ পড়ার পিছনে কেকেআরের কোনও দায় নেই বলা যথাযথ হবে কিনা, সেই বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কেননা, কেকেআর চাইলে বিশ্বকাপের ঠিক আগে নিজেকে প্রমাণ করের সুযোগ পেতেই পারতেন রিঙ্কু। তবে জয়ের নেশায় মত্ত নাইট রাইডার্সের কাছে রিঙ্কু জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন কী না পেলেন, সেই বিষয়টা প্রধান্য পায়নি।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে জয়টাই যেখানে প্রধান লক্ষ্য, সেখানে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত স্বার্থ নিয়ে মাথা ঘামানোর উপায় থাকে না। তার উপর নাইট রাইডার্স শেষবার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এক দশক আগে। তাই এক্ষেত্রে রিঙ্কুকে নিয়ে আলাদা করে ভাবার সময় ছিল না নাইট টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে।
কেকেআর নিজেদের জয় নিশ্চিত করতেই রিঙ্কুকে ফিনিশার হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। রিঙ্কু সেই ভূমিকা যথাযথ পালন করে চলেছেন। বেশিরভাগ ম্যাচেই রিঙ্কুকে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে পাঠায় কলকাতা। অথচ বেশ কয়েকটি ম্যাচে উপযুক্ত মঞ্চ প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও কেকেআর রিঙ্কুকে ব্যাটিং অর্ডারে তুলে আনেনি। ক্যাপ্টেন শ্রেয়স আইয়ার নিজেও সম্ভবত বিশ্বকাপের টিকিটের কথা ভাবছিলেন। তাই সতীর্থের জন্য নিজের স্বার্থ ত্যাগ করার রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়নি আইয়ারকে।
একেবারে শেষ মুহূর্তে ঘরের মাঠে দিল্লির বিরুদ্ধে রিঙ্কুকে উপরে ব্যাট করতে পাঠায় কলকাতা। তবে ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। নির্বাচকরা মনস্থির করে ফেলেছিলেন রিঙ্কুকে বাদ দেওয়ার। দেওয়াল লিখনটা বোধহয় বুঝতে পেরেছিলেন রিঙ্কুও। তাই চাপের মুখে নিজের ছাপ রাখার শেষ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।