মঙ্গলবারের এক অভিশপ্ত দুপুরে ভয়াবহ রক্তাক্ত অধ্যায় ফের একবার চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের বুকে। সেখানে পহেলগাঁওতে বাইসরনে যখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগে মেতে ছিলেন পর্যটকরা, তখনই তাঁদের টার্গেট করে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে জঙ্গিরা। মুহূর্তে মৃত্যু ঘটতে থাকে। ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ঘটনায়। গোটা হামলায় মৃতদের প্রতি শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাশ্মীরের জঙ্গি হানায় যে সমস্ত পর্যটকের নারকীয় হত্যা চালিয়েছে জঙ্গিরা, তাঁদের মধ্যে একজন বাংলার বিতান অধিকারী। কলকাতার বৈষ্ণবঘাটা পাটুলির বাসিন্দা বিতান অধিকারীও ওউ জঙ্গি হানার শিকার। ঘটনার কথআ জানতেই তাঁর বাড়িতে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজেও বিতান অধিকারীর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে এক পোস্টে জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পোস্টে লেখেন,' জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার শিকার পরিবারের প্রতি আমার হৃদয় বেদনার্ত।' তিনি এরপর লেখেন,'নিহতদের মধ্যে একজন, শ্রী বিতান অধিকারী, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। আমি তার স্ত্রীর সাথে ফোনে কথা বলেছি। যদিও এই শোকের মুহূর্তে তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য কোনও শব্দ যথেষ্ট নয়, আমি তাঁকে আশ্বাস দিয়েছি যে আমার সরকার তার মৃতদেহ কলকাতায় তার বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে।' মমতা লিখছেন,'এই অমানবিক সন্ত্রাসী হামলায় যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন তাঁদের সকল পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা।'
প্রসঙ্গত, এই জঙ্গি হামলা যেদিন হয় সেদিন দুপুরে পহেলগাঁওয়ের ওই এলাকায় ছিলেন বিতান ও তাঁর স্ত্রী, সন্তান। তাঁর স্ত্রী সোহিনীর চোখের সামনে জঙ্গিরা গুলি করেছে বিতানকে। ভয়াবহ স্মৃতি, ঘটনার বীভৎসতা সব কিছু এই মুহূর্তে যেন ঘিরে ধরেছে স্ত্রী সোহিনীকে। বাঁধ মানছে না তাঁর চোখের জল। ৪০ বছর বয়সী বিতান এসেছিলেন ভারতে ফ্লোরিডা থেকে। সেখানেই তিনি কর্মরত ছিলেন। গত ৮ এপ্রিল তাঁরা তিন বছরের পুত্র হৃদানকে নিয়ে কলকাতার বাড়িতে ফিরেছিলেন। গত ১৬ এপ্রিল তিন জনে জম্মু-কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেটাই তিনজনের শেষবার একসঙ্গে যাত্রা ছিল। নারকীয় জঙ্গি তাণ্ডবের বর বিতানের কলকাতার বাড়িতে এল দুঃসংবাদ। তাঁদের ফেরার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। তার আগে মঙ্গলবার এল ওই শোকসংবাদ।