রবিবার সিটি সেন্টার ওয়ানের নিচ থেকে উদ্ধার হয়েছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্মী চন্দন মণ্ডলের দেহ। এটি নিছকই আত্মহত্যার ঘটনা নয় বলেই দাবি চন্দনের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা মণ্ডলের। তাঁর দাবি, তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করার মতো দুর্বল মনের মানুষ ছিলেন না। চন্দনের মা বাবলি মণ্ডলও এই মৃত্যুর পিছনে অন্য রহস্য রয়েছে বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, তাঁর ছেলে নিজে থেকে পড়ে যায়নি। যদিও এবিষয়ে এখনও কোনও তথ্য পায়নি পুলিশ। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: ‘আর চাপ সহ্য করতে পারছি না’, স্ত্রীকে মেসেজ লেখার পর স্বামীর দেহ মিলল সিটি সেন্টারে
প্রাথমিকভাবে যে তথ্য জানা গিয়েছে, তাতে কর্মক্ষেত্রে চন্দনের মানসিক চাপ সামনে এসেছে। চন্দনের স্ত্রী তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে পরপর ১০ টি মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু, সেগুলির একটিও দেখেননি চন্দন। জানা গিয়েছে, চন্দন যে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সরকার কর্মী ছিলেন সেই সংস্থার তরফে একটি বাইক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। সেই উপলক্ষে সকলেই সিটি সেন্টারে পৌঁছে গিয়েছিলেন চন্দন। তাঁর ফোন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি সকাল ৭:৩৮ টায় স্ত্রীকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠিয়ে বলেছিলেন, ‘সিটি সেন্টারে যাচ্ছি। তুমি টিফিন খেয়ে নিও।’
তার তিন ঘণ্টা পরেই স্ত্রীকে আরও একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করেন চন্দন। তাতে লেখা ছিল, ‘বাবু তুমি আর ছোট বাবু আমায় ক্ষমা করে দিও। আমি আর আমাদের ফ্যামিলি মেইনটেন করতে পারলাম না।’ তারপরও লেখা রয়েছে ‘সরি’। সেই মেসেজ দেখার পরেই কার্যত চমকে উঠেছিলেন তাঁর স্ত্রী। কারণ প্রিয়াঙ্কার দাবি, চাকরি হারানোর ভয় পেতেন চন্দন। তার জন্য তার স্ত্রী তাঁকে মানসিকভাবে শক্ত হতে বলতেন। আর তার জন্য চন্দনের স্ত্রী হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই তিনি স্বামীকে ফোন করেছিলেন। কোনও উত্তর না পেয়ে তিনি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে লেখেন, ‘তোমায় ছাড়া আমি মরে যাব, প্লিজ।’ তারপরেও কোনও উত্তর না মেলায় হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে স্বামীকে ফোন করতে বলেন প্রিয়াঙ্কা। তাতেও উত্তর না পেয়ে পর পর তিনি আরও কয়েকটি মেসেজ করেন স্বামীকে। এভাবে মোট ১০টি মেসেজের কোনও উত্তর না পাওয়া চন্দনকে ফোন করেন প্রিয়াঙ্কা। বেশ কয়েকবার পর একজন ফোন ধরলে চিৎকার শুনে বুঝতে পারেন খারাপ কিছু হয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনেই তিনি বিধান নগর হাসপাতালে চলে যান।