বিজেপির ‘হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই’ প্রচারকে বিদ্রুপ করে রাজ্যের বিভিন্ন শহরে পোস্টার টাঙিয়েছে তৃণমূলের আইটি সেল। আর তার একটিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে কেন কেন্দ্রে বাঙালি পূর্ণ মন্ত্রী নেই। আর এই প্রশ্নে তৃণমূলকে পালটা তীব্র আক্রমণ করলেন বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ। তাঁর দাবি, হিন্দু ঐক্য নষ্ট করতে অবান্তর প্রশ্নের অবতারণা করছে তৃণমূল।এদিন রাজ্যের বিভিন্ন শহরে তৃণমূল আইটি সেলের নামে হলুদের ওপর কালো ও লাল দিয়ে লেখা নানা ব্যানার দেখা যায়। তার একটিতে লেখা, ‘হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই, কিন্তু বাঙালি মন্ত্রী নাই’। এব্যাপারে শংকরবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কে হবেন সেটা প্রধানমন্ত্রীর এক্তিয়ার। এই নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে না। যেমন রাজ্যের মন্ত্রী কে হবেন সেটা মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করেন। এব্যাপারেও কারও প্রশ্ন তোলার অধিকার নেই। আমরা যদি প্রশ্ন করি কেন রাজ্যের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ৫ দফতরের মন্ত্রীরা মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ার বাসিন্দা? জেলার কথা তো বাদ দিন, উত্তর কলকাতা থেকেও কি ওই পদে বসার যোগ্য কেউ নেই? কিন্তু এই প্রশ্ন তুলে লাভ নেই।শংকরবাবু বলেন, বিজেপি দেশকে ও দেশের অগ্রগতিকে প্রাধাণ্য দেয়। তাই কাউকে তার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মন্ত্রী করা হয়। এটা কংগ্রেসি সরকার নয় যে জাতপাতের সমীকরণ বা ভোটের কথা ভেবে কাউকে মন্ত্রী করবে। কংগ্রেস জমানায় যখন যে রাজ্যে বিধানসভা ভোট হত তার ৬ মাস আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সেই রাজ্যের মন্ত্রীর সংখ্যা বেড়ে যেত। এখন তা হয় না।শংকরবাবু বলেন, রাজ্যের বিজেপি সাংসদদের সংসদীয় অভিজ্ঞতা সর্বোচ্চ ৬ বছরের। কেন্দ্রীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র কী ভাবে কাজ করে তা এখনও শেখা অনেকটাই বাকি। তাই রাজ্যের সাংসদদের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নয়, যে ৫ জন মন্ত্রী সব সিদ্ধান্ত নেন আর বাকিরা শুধু সেই কাগজে সই করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের গুজরাতে এই দফতর সামলানোর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নিজে বিদেশ সচিব ছিলেন। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন নিজে অর্থনীতির কৃতী ছাত্রী। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো পেশায় প্রযুক্তিবিদ।তৃণমূলের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্যকে খোঁচা দিয়ে শংকরবাবু বলেন, দেবাংশুর হয়তো জানা নেই, ও ছোট ছিল ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল রাজ্য থেকে ১৯টি আসন পেয়েছিল। সেবার UPA ২ সরকারের তরফে তৃণমূলকে ২টি কেন্দ্রীয় পূর্ণমন্ত্রী ও ৩টি প্রতিমন্ত্রীর পদ নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের সমান উচ্চতায় কাউকে দেখতে চান না বলে একটি পূর্ণ মন্ত্রীর পদের বদলে ৩টি প্রতিমন্ত্রীর পদ নিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়েছিল রেলমন্ত্রী আর সঙ্গে ৬ জন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী? তখন কেন বাঙালিকে কেন্দ্রীয় পূর্ণমন্ত্রী পাওয়া থেকে বঞ্চিত করেছিল তৃণমূল?