যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রাত্য বসুর গাড়িতে ‘পিষে যাওয়া’ ইন্দ্রানুজ রায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন সিপিআইএম নেতারা। আর সেই আবহে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পরে তাঁকে ‘কুকুর’, ‘ভণ্ড’ এবং ‘অত্যাচারী’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে পোস্ট করেছিলেন ইন্দ্রানুজ, সেটা দেখিয়ে সিপিআইএমকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, 'কমরেড, ঘোষিত সম্মেলন, মন্ত্রীর গাড়িতে হামলার মতো বাঁদরামি সমর্থন করার আগে গণতন্ত্রের প্রতীকের ভাষাটা পড়ে নিলে ভালো হয়। এই গণতন্ত্রের প্রতীকেরই ওটা ভাষা কিনা, চলুন খতিয়ে পরীক্ষা করা যাক। দেউলিয়া সিপিএমের হাল এমনটাই।'
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে 'বিশ্বস্ত কুকুর' বলেছিলেন ইন্দ্রানুজ
আর কুণাল যে পোস্টের উল্লেখ করেছেন, সেটা ২০২৪ সালের ৮ অগস্ট করা। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণের দিনেই ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে ইন্দ্রানুজ বলেছিলেন, ‘Death of a Hypocrite, Death of a Tyrant (ভণ্ডের মৃত্যু, অত্যাচারীর মৃত্যু)। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে দুঃখেরও যেরকম কিছু নেই, আনন্দেরও কিছু নেই।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘শাসক শ্রেণির এককালীন বিশ্বস্ত কুকুর হিসেবে তিনি তার কর্তব্য পালন করেছেন, তাই বলেই এই প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্র তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিচ্ছে, যা কমিউনিস্টদের প্রাপ্য নয়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, তার অঙ্গুলিহেলনে খুন হওয়া জনগণ ও কমিউনিস্টদের রক্তঋণ শোধ করতে গিয়ে গণ আদালতে মারা হয়নি যে আনন্দের সঙ্গে পালন করবার কিছু রয়েছে।’

মাওবাদী নেতার মৃত্যুদিবসকে ‘শাহাদাত দিবস’ বলেছিলেন!
শুধু তাই নয়, কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্বকে ‘কুকুর’ বলে সম্বোধন করেছেন ইন্দ্রানুজ। যে সমস্ত পোস্ট তাঁর ফেসবুকের দেওয়ালে আছে। আবার ইন্দ্রানুজের ফেসবুক দেওয়ালে মাওবাদী নেতার সমর্থনেও পোস্ট দেখা গিয়েছে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই একটি পোস্টে তিনি বলেছিলেন, 'কমরেড আজাদের (চেরুকুরি রাজকুমার) শাহাদত দিবস।' তাঁকে নাকি '২০১০ সালের ১ জুলাই খুনি ভারত সরকার শান্তি আলোচনায় ডাকার ছলনায় নিরস্ত্র অবস্থায় খুন করে।' ওই মাওবাদী নেতাকে ‘পেশাদার বিপ্লবী’ হিসেবেও চিহ্নিত করেছিলেন ইন্দ্রানুজ।

আরও পড়ুন: Bratya Basu: 'ড্রাইভার কমবয়সি ছিল', কেন যাদবপুরে ‘ছাত্র চাপা’ দিলেন? অবাক সাফাই শিক্ষামন্ত্রীর
সিপিএম জনগণের কাছে লাথ খেয়েছে, বলেছিলেন ইন্দ্রানুজ
তারইমধ্যে সিপিআইএমের বিরুদ্ধে একাধিকবার ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে ইন্দ্রানুজকে। ২০২৪ সালের জুনের একটি পোস্টে তিনি বলেছিলেন, ‘জনগণকে দোষ দিয়ে, নিজেদের এই আমরা শিক্ষিত, আমরা কালচার্ড, বাকি সব ভিক্ষা পেয়ে খুশি অশিক্ষিতের দল মার্কা নাক উঁচুপনার কারণেই সিপিএম জনগণের কাছে লাথ খেয়েছে, আগামীতে আরও খাবে। জনগণ মূর্খ নয়, তোরা জনগণের পার্টি না হয়ে মধ্যবিত্তের পার্টি হয়েছিস, গণ আন্দোলন ছেড়ে কোর্ট, ইডি সিবিআইয়ের উপর ভরসা রেখে কিছু স্টান্টবাজির শর্টাকাট বেছে নিয়েছিস বলেই লাথ খেয়েছিস। আগামীতে আরও খাবি না শুধরোলে।’