রাত পোহালেই একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ। আর ঠিক তার প্রাক্কালে চূড়ান্ত মুহূর্তের প্রস্তুতি পরিদর্শন করে গেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ শনিবার সন্ধ্যায় ৬টা নাগাদ ধর্মতলায় আসেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের দিকে মূল মঞ্চের পিছনে ভিভিআইপি এন্ট্রি পয়েন্ট ঘুরে দেখেন। সভামঞ্চ সংলগ্ন আসনে নিজে বসে প্রস্তুতির সমস্ত খোঁজখবর করেন। তাঁর সঙ্গে দেখা যায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র, দেবাশিস কুমার, সাংসদ সায়নী ঘোষ, মালা রায়, সুব্রত বক্সী–সহ অন্যান্যরা।
এদিন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এসে ঘুরে যান। তৃণমূলনেত্রী মঞ্চে পৌঁছতেই সামনে ভিড় করেন দলের নেতারা। তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণামের হিড়িক পড়ে যায়। এসব দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করেননি। তিনি মঞ্চের নীচে চেয়ারে বসে পড়েন। তখন সেখানেই একে একে নেতারা এসে নেত্রীকে প্রণাম করেন। তিনিও সকলের সঙ্গে কথা বলেন। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সঙ্গে কথা বলে নানা তথ্য নোট করে নেন। ধর্মতলার হাইভোল্টেজ সভা রবিবার। সেখানে উপস্থিত থাকবেন সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। ইন্ডিয়া জোটের আরও অন্য কেউ থাকতে পারে বলে সূত্রের খবর। তাই প্রস্তুতির হালহকিকত সরেজমিনে দেখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পেন, চিরকুট নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখে নেন।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুর বিমানবন্দরে বিনিয়োগ করছে জেএসডব্লিউ গ্রুপ, পরিকাঠামো গড়ে তুলতে উদ্যোগ
ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে তৈরি হয়েছে একুশে জুলাই শহিদ সমাবেশের মঞ্চ। নতুন মঞ্চ কেমন হল সেটা দেখতে শনিবার সন্ধ্যাতেই পৌঁছে যান দলনেত্রী। ২১ জুলাইয়ের আগের দিন প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বরাবর যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার আবার লোকসভা নির্বাচনে দারুণ ফলাফলের পর একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ। তাই বিশেষ প্রস্তুতি হয়েছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘২১ জুলাই এবং বিভিন্ন গণ আন্দোলনে যাঁরা শহিদ হয়েছিলেন তাঁদের স্মরণ করার জন্যই এই সমাবেশ। মা–মাটি–মানুষ দিবস হিসেবে পালন করি আমরা এই দিনটিকে। দূর থেকে হেঁটে এই সমাবেশে যোগ দিতে আসেন কর্মী–সমর্থকরা। শান্তিপূর্ণভাবে, মাথা ঠান্ডা রেখে এই সমাবেশে যোগ দেবেন। বাসের চালককে বলবেন গাড়ি ধীরে চালাতে। যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। পুলিশকে নজর রাখতে বলেছি। ট্রেন যাতে বাতিল বা বন্ধ না হয় তার জন্য আমরা ১৫ দিন আগেই অনুরোধ করেছিলাম। কেউ যেন সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য ঝুঁকি নেবেন না।’
এদিন সাংসদ সায়নী ঘোষ পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন মুখ্যমন্ত্রীর। একুশে জুলাইয়ের আগে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার খড়গপুর ২ নম্বর ব্লকের লছমামাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাটরাঙার পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। আবার আজ নদিয়ায় গয়েশপুর পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান শ্যামল ঘোষ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আবহাওয়া ঠিক থাকলে অখিলেশ আসবে। আমি ওঁকে অনুরোধ জানিয়েছি। এটা শুধু রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, বাংলা এবং দেশের অস্তিত্ব রক্ষার সভা। বাংলা মা’কে রক্ষা করার লড়াই। নির্বাচনে আমাদের সমর্থন করার জন্য বাংলার মা–মাটি–মানুষ সহ দেশের সকল নাগরিককে প্রণাম জানাচ্ছি। বাকি বক্তব্য কাল জানাব। বুদ্ধিজীবীরাও আসবেন।’