খেলতে খেলতে আচমকাই একটি এলইডি বাল্ব গিলে ফেলেছিল শিশু। তারপর থেকেই যন্ত্রনায় কাহিল হয়ে পড়েছিল সে। ওষুধ খেয়েও কোনও কাজ হচ্ছিল না। পেটের ব্যথা বেড়েই যাচ্ছিল। অবশেষে বেশ কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পরে শিশুকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। সেখানেই চিকিৎসকরা পেট কেটে শিশুর ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে সেই বাল্ব বের করেন। এভাবেই চিকিৎসকরা প্রাণ বাঁচলেন একরত্তির।
আরও পড়ুন: রক্ত যাচ্ছিল না মাথায়, পিজিতে শিশুর অপারেশনে বিরাট সাফল্য বাংলার চিকিৎসকদের
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুর নাম ঋক গোলদার। শিশুটি ২৪ পরগনা বাসিন্দা। ঘটনাটি ঘটেছে কয়েকদিন আগে। খেলার সময় হাতের কাছে ছোট্ট এলইডি বাল্ব পড়ে থাকতে দেখে খেয়ে ফেলেছিল। এরপরেই যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকায় তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান বাবা-মা। চিকিৎসকের পরামর্শে শিশুর পেটের এক্স রে করে দেখা যায়, ক্ষুদ্রান্ত্রের একটি অংশে বাল্বটি আটকে রয়েছে। বাল্বটি যাতে মলত্যাগের সঙ্গে বেরিয়ে তার জন্য বেশ কিছু ওষুধ দেন চিকিৎসক। কিন্তু, বেশ কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পরেও বাল্বটি না বেরোনোই দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় পরিবার।
এরপর আবার তারা চিকিৎসকের যান। সেখানে এক্স রে করে দেখা যায় একই জায়গায় রয়েছে বাল্বটি। ৫-৬ দিন কেটে যাওয়ার পরেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন তো হয়নি উলটে পেটে ব্যথা আরও বাড়তে থাকে। তখন ফের তারা চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। এভাবে তিন তিনবার এক্স রে করে দেখা যায় একই জায়গায় রয়ে গিয়েছে বাল্বটি।
পরে শিশুকে এসএসকে হাসপাতাল নিয়ে যান তার বাবা মা। সেখানে তাকে শিশু শল্য বিভাগে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা প্রথমে ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে বাল্বটি বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয় পেট কেটে বের করতে হবে বাল্বটি। তখন তার পেটে অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসক সুজয় পাল জানিয়েছেন, ক্ষুদ্রান্তের প্রথম অংশ ডিওডেনামে এলইডি বাল্বটি আটকে ছিল। বাল্বের দুই প্রান্তের সূক্ষ্ম তার ক্ষুদ্রান্ত্রে গেঁথে গিয়েছিল। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে শিশুর অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর সেটি বের করা হয়।
চিকিৎসকরা জানান দীর্ঘদিন বাল্বটি একই জায়গায় থাকলে সেক্ষেত্রে অন্ত্র ফুটো দিয়ে পেটের ভিতরে খাবার জমে মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারত। তাতে শিশুর জীবন সংশয় পর্যন্ত ঘটতে পারতো। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, শিশুটিকে বাঁচানো গিয়েছে ঠিকই। তবে বাবা মাকে এ নিয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে। এই ধরনের জিনিস যেন শিশুরা হাতে নাগালে না পায় তা নিয়ে সজাগ থাকতে হবে।