শিয়ালদা আদালতে ১০০-র বেশি প্রশ্নের মুখে পড়ল সঞ্জয় রায়। সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শুক্রবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়কে ১০০-র বেশি প্রশ্ন করেন শিয়ালদা আদালতের বিচারক। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে চলে সেই প্রশ্নোত্তর পর্ব। যে যে অভিযোগ উঠেছে, সাক্ষীরা যে যে বিষয় জানিয়েছেন, সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সঞ্জয়কে প্রশ্ন করেন বিচারক। খুঁটিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানতে চান বলে সূত্রের খবর।
আদালতে ঢোকার সময় ‘নার্ভাস’ ছিল সঞ্জয়
এমনিতে শুক্রবার সকাল ১১ টা নাগাদ সঞ্জয়কে শিয়ালদা আদালতে নিয়ে আসা হয়। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, আদালতের সামনে গাড়ি থেকে নামার সময় সঞ্জয়কে দেখে বেশ ‘নার্ভাস’ লাগছিল। তারইমধ্যে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। প্রথম দফায় দুপুর দুটো পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন বিচারক। তারপর ৩০ মিনিটের মধ্যাহ্নভোজের বিরতি হয়। সংক্ষিপ্ত বিরতির পরে দুপুর ২ টো ৩০ মিনিট নাগাদ থেকে ফের সঞ্জয়কে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন বিচারক। দীর্ঘক্ষণ চলে সেই প্রশ্নোত্তর-পর্ব। ঘড়ির কাঁটায় বেজে যায় বিকেল পাঁচটা।
আরও পড়ুন: Mother of Nirbhaya: 'দেশের মেয়েরা এখনও সুরক্ষিত নয়', আরজিকর কাণ্ডের কথাও তুললেন নির্ভয়ার মা
শেষের পথে আরজি কর মামলার শুনানি
এমনিতে আপাতত নিম্ন আদালতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শেষের দিকে পৌঁছে গিয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয় যে মাসখানেকের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Rupanjana Mitra: ‘কারা চেয়েছিল CBI তদন্ত’, সন্দীপ-অভিজিতের জামিনে প্রশ্ন একদা BJP করা রূপাঞ্জনার
৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে বিচারপ্রক্রিয়ায়
যে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ১১ নভেম্বর থেকে। তারপর থেকে নিয়মিত শিয়ালদা আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া চলেছে। সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা চলছে, সেটা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা। প্রাথমিকভাবে দোষীকে সাজা দেবে শিয়ালদা আদালত। সেজন্য ইতিমধ্যে মোট ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়ে গিয়েছে। বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে তরুণী চিকিৎসকের চার সতীর্থ, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ এবং ডাক্তার-সহ অন্যদের। তরুণী চিকিৎসকের যে চার সতীর্থের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে, তাঁরা সেই অভিশপ্ত ৮ অগস্টের রাতে (ইংরেজি মতে ৯ অগস্ট) একসঙ্গে খাবার খেয়েছিলেন।
সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পরিবার
তারইমধ্যে সিবিআই তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা। নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে সিবিআই চার্জশিট দাখিল করতে না পারায় ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তৎকালীন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল জামিন পেয়ে গিয়েছে। আর তারপরই সিবিআই তদন্তের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা। সেই মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে সিবিআইকে নিজের অবস্থান জানাতে হবে।