আন্দোলনের চাপে যাদবপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজি (আইআইসিবি) মাথনত করতে বাধ্য হল। এমনই দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ। তিনি দাবি করেছেন, ‘ছাঁটাই হওয়া CSIR-IICB-র (কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের অধীনস্থ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজি) কর্মীদের নিঃশর্তভাবে কাজে ফেরানো হল। বাঙালি ঐক্যবদ্ধভাবে প্রমাণ করে দিল যে বিজেপির কৌশল বাংলায় চলবে না। আসলে বিভা ট্যান্ডন (নয়া ডিরেক্টর) ভুলে যাচ্ছেন এটা বাংলা, বিজেপি-শাসিত কোনও রাজ্য নয়। জয় বাংলা।’
বিষয়টি নিয়ে আইআইসিবির তরফে আপাতত কোনও মন্তব্য করা না হলেও নয়া বছরের প্রথম দিন থেকেই যাদবপুরের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষোভের পারদ চড়েছিল। অভিযোগ ওঠে যে আচমকা ৫১ জন চুক্তিভিত্তিক কর্মীকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে প্রত্যেককে পুনর্বহালের দাবিতে নয়া ডিরেক্টরকে ঘেরাও বিক্ষোভ চলতে থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে ওই কর্মীরা চাকরি করছিলেন
বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, যাদবপুরের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে মোট ৯৭ জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী কাজ করতেন। কারও চাকরির বয়স ৩০। কেউ আবার ২০ বছর ধরে চাকরি করছেন। কিন্তু নয়া বছরের পয়লা দিনে কাজে গিয়ে ৫১ জন জানতে পারেন যে তাঁদের ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে। যাঁদের ছাঁটাই করে দেওয়া হয়, তাঁদের আগেভাগে কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা।
তাঁরা দাবি করেন, নয়া ডিরেক্টর এসে রাজ্যের বাইরে সংস্থার মাধ্যমে যাদবপুরের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগের পরিকল্পনা করছেন। নয়া ডিরেক্টর উত্তরপ্রদেশের নয়ডার কনট্র্যাক্টরকে সেই দায়িত্ব দিয়েছেন বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা।
আসরে নামে বাংলা পক্ষও
সেই আবহে আসরে নামে বাংলা পক্ষও। বিষয়টি নিয়ে বাংলা পক্ষের শীর্ষ পরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি অভিযোগ করেন, ৩০-৩৫ বছর ধরে কাজ করা বাঙালি চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বের করে দিয়ে উত্তরপ্রদেশের লোককে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে।
গবেষকও আহত হয়েছিলেন, দাবি বিক্ষোভকারীদের
তারইমধ্যে বিক্ষোভে সামিল হন গবেষকরাও। অভিযোগ ওঠে যে বিক্ষোভের মধ্যেই এক গবেষক আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, বিক্ষোভের মধ্যেই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন নয়া ডিরেক্টর। তার জেরে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। ডিরেক্টরকে আটকানোর চেষ্টা করেন গবেষকরা। সেইসময় তাঁদের উপরে নিরাপত্তারক্ষীরা চড়াও হন বলে অভিযোগ ওঠে।
সবমিলিয়ে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। উত্তেজনার আঁচ ক্রমশ বাড়তে থাকে। অবশেষে শুক্রবার রাতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজি কর্তৃপক্ষ ৫১ জন চুক্তিভিত্তিক কর্তৃপক্ষকে কাজে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র তন্ময়।