রাজভবন থেকে অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়া হোক কলকাতা পুলিশের নিরাপত্তা। আজ, সোমবার কলকাতা পুলিশের কর্তাদের রাজভবন খালি করে দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে বলে এক অফিসার সূত্রে খবর। রাজভবনের নিরাপত্তার জন্য কলকাতা পুলিশের আর প্রয়োজন নেই বলে জানানো হয়েছে। এমনকী রাজভবন চত্বর থেকে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সরানোর নির্দেশ দিয়ে নবান্নে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলে সূত্রের খবর। রাজভবনের উত্তর দিকের গেটে যে পুলিশ আউটপোস্ট আছে সেটা খালি করতে বলা হয়েছে।
গতকাল রাজভবনে আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের নিয়ে রাজভবনে আসেন শুভেন্দু অধিকারী। তখনই রাজ্যপাল সব শুনে জানিয়ে দেন, এখানে পুলিশমন্ত্রীর প্রবেশ নিষেধ। আর এবার রাজভবনের উত্তর দিকের গেটে থাকা পুলিশ আউটপোস্ট খালি করে সেখানে ‘জন মঞ্চ’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছেন রাজ্যপাল। সে কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। দু’দিন আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা নিজের এজলাসে প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস গৃহবন্দি কি না। তারপরেই রাজ্যপাল নবান্নে চিঠি দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এবার সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে রাজভবনের এক অফিসার বলেন, ‘রাজভবনে থাকা অফিসার ইনচার্জ থেকে শুরু করে কলকাতা পুলিশকে জায়গা খালি করতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘প্রবল ঝাঁকুনি সব যেন নাড়িয়ে দিল’, বেঁচে ফিরে মন্তব্য কাঞ্চনজঙ্ঘার যাত্রী সুকান্ত মজুমদারের
এই জন মঞ্চ করে রাজ্যপাল বাংলার মানুষের অভাব–অভিযোগ শুনবেন। সেই মতো কাজ করবেন। তাই রাজভবনের উত্তর গেটের থেকে কলকাতা পুলিশের আউটপোস্ট এবং ভিতরে থাকা পুলিশ সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজভবন সূত্রে খবর, নবান্নে পাঠানো রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস চিঠিতে লিখেছেন, রাজভবন চত্বরে কলকাতা পুলিশের নিরাপত্তায় তিনি মোটেই সুরক্ষিত বোধ করছেন না। তাই অবিলম্বে রাজভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হোক। যদিও রাজভবনের চিঠি পেয়ে নবান্নের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
হঠাৎ কেন ক্ষেপে গেলেন রাজ্যপাল? কলকাতা পুলিশের উপর ক্ষেপলেন কেন? এইসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আসলে গত বৃহস্পতিবার রাজভবনে থাকা কলকাতা পুলিশ ভিতরে ঢুকতে বাধা দেয় শুভেন্দু অধিকারীকে। সেটা জানতে পেরে বেজায় চটে যান রাজ্যপাল। আর পুলিশ রাজভবনে ঢুকতে দেয়নি এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা মন্তব্য করেন, ‘রাজভবনে কি রাজ্যপালকে গৃহবন্দি করে রাখা রয়েছে? না হলে তাঁর অনুমতি সত্ত্বেও কেন দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না?’ এই ঘটনার পরই রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত নেন রাজভবনে কর্তব্যরত সব পুলিশকর্মীকে সরাবেন। আর এবার তাই হতে চলেছে।