কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ সম্পূর্ণ রূপে কার্যকর না করায় ভরা এজলাসে বিচারপতিদের চরম তিরস্কার শুনতে হল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর চেয়ারম্যান-সহ অন্য আধিকারিকদের। ক্ষুব্ধ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, আগামী দিনে যদি নির্দেশ না মানা হয়, তাহলে এজলাস থেকেই এসএসসি আধিকারিকদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয় হবে!ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলাকালীনই এসএসসি-র আচরণে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। সেইসঙ্গে, রীতিমতো কড়া ভাষায় এসএসসি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ পালন করতে বলা হয়।তথ্য বলছে, আগেই কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ১৫ হাজার পদে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু, এসএসসি সেই নির্দেশ সম্পূর্ণ রূপে পালন করেনি বলে অভিযোগ। এই মর্মেই আদালতে মামলা রুজু করেন এক চাকরিপ্রার্থী। আজ (মঙ্গলবার - ২৯ এপ্রিল, ২০২৫) সেই মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে।এদিনের শুনানিতে আদালতে উপস্থিত ছিলেন এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার-সহ অন্য আধিকারিকরা। এসএসসি-র আইনজীবী আদালতকে জানান, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক ইতিমধ্যেই ৯,০০০-এর বেশি পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু, বাকি পদগুলিতে নিয়োগ সংক্রান্ত সুপারিশ করা যায়নি। কারণ, সেটা করলে অনুপাত বা রেশিও ঠিক রাখা যাচ্ছে না।এর ব্যাখ্যা দিয়ে এসএসসি-র আইনজীবী আদালতকে জানান, কোথাও শিক্ষকের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ করার মতো কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোথাও প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। তাই বাকি পদগুলিতে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়নি। এই যুক্তি যদিও আদালতে ধোপে টেকেনি। উলটে ডিভিশন বেঞ্চ একের পর এক কড়া মন্তব্য করেছে।আদালতের সাফ কথা, 'কোনও অজুহাত দেখাবেন না। কেন কার্যকর হয়নি নির্দেশ? তা হলে কীভাবে কাউন্সেলিং করলেন? আপনার কী ক্ষমতা রয়েছে, জানার দরকার নেই। আদালতের নির্দেশ পালন করতে হবে। এখান থেকেই আধিকারিকদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেব।'এরপরই আদালত ডেপুটি শেরিফকে ডেকে পাঠায়। এসএসসি-র আইনজীবী বিচারপতিদের তাঁর মতো করে বোঝানোর চেষ্টা করেন। বলেন, 'আমাদের কথা শুনুন।' প্রত্যুত্তরে বিচারপতি চক্রবর্তী বলেন, 'এত দিন গেল, নির্দেশ কার্যকর হয়নি কেন?'এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৬ মে। বেঞ্চের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হল কিনা, তা বিবেচনা করে দেখা হবে।