কুড়মি সম্প্রদায়ের বক্তব্য, তাদের সঙ্গে যে রাজনৈতিক দল যেমন আচরণ করেছে তাদের সঙ্গেও তারা ঠিক সেরকমভাবে আচরণ করবে। ঝাড়গ্রাম শহরে মঙ্গলবার একটি অতিথিশালায় কুড়মি সমাজের আগামী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা সভা হয়। সেই আলোচনা সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করা কুড়মিদের সমাজ থেকে বহিষ্কার করার হুঁশিয়ারী। প্রতীকী ছবি
পঞ্চায়েত ভোটে কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন না করার অবস্থান নিয়েছিল কুড়মি সম্প্রদায়। সেই সঙ্গে এই সম্প্রদায় থেকে কেউ রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করলে তাঁর কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার অবসেরই দিয়েছিল কুড়মি সমাজ। ফলে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়েছিলেন অনেকেই। সেই মতোই এই সম্প্রদায় থেকে অনেকেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়েছিলেন। ভোট পর্ব মিটে গিয়েছে। এবার এই সম্প্রদায় থেকে যে সমস্ত মানুষ ভোটে রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে কুড়মি সমাজ। মঙ্গলবার একটি আলোচনাসভায় কুড়মি সমাজের মানুষজন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যারা রাজনৈতিক দলের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন বা সমর্থন করেছেন তাঁদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না। এমনকী তাঁদের সমাজ থেকে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুড়মি সংগঠনগুলি। এ নিয়ে তারা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। কুড়মালি ভাষায় আন্দোলনটির নাম ‘দৌওদিয়াকে খৌওসিয়া’ যার অর্থ ‘যেমনকে তেমন’।
কুড়মি সম্প্রদায়ের বক্তব্য, তাদের সঙ্গে যে রাজনৈতিক দল যেমন আচরণ করেছে তাদের সঙ্গেও তারা ঠিক সেরকমভাবে আচরণ করবে। ঝাড়গ্রাম শহরে মঙ্গলবার একটি অতিথিশালায় কুড়মি সমাজের আগামী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা সভা হয়। সেই আলোচনা সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। মোট ৫০ টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত হল, যে সমস্ত কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন রাজনৈতিক দলের দাসত্ব করছে তাঁদের কোনও উৎসব, অনুষ্ঠান, বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে কুড়মি সম্প্রদায়ের কোনও মানুষজন যাবে না। এই দাবিগুলিকে সামনে রেখে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর রেল টেকাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সম্প্রদায়। তাতে ঝাড়গ্রামের কুড়মি সমাজের বহু মানুষজন অংশগ্রহণ করবে বলে ঠিক হয়েছে।
এ বিষয়ে কুড়মি সম্প্রদায়ের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো বলেন, ‘এর আগে আমরা বহুবার আন্দোলন করেছি। সেই সময় আমাদের দাবি পূরণ করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ করা হয়নি। প্রত্যেকবার আমাদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূলখুঁটি মূল মানতা অজিত প্রসাদ মাহাতো যদি আমাদেরকে লিখিত দেন যে তাঁরা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন না তাহলে আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে রেল টেকাও কর্মসূচি গ্রহণ করব।’