আজ, বুধবার আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট উঠে গেল। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে আলুর জোগান স্বাভাবিক হবে বলে খবর। আজ রাতে হিমঘর থেকে বেরোবে আলু। হরিপালে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এদিন কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্নার বৈঠক হয়। তার পরেই মিলল সমাধান সূত্র। আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার হয়ে গেল। আর কমতে পারে আলুর দাম বলে মনে করা হচ্ছে। আলুর ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ে যে নাভিশ্বাস উঠেছিল মধ্যবিত্তের সেখান থেকে এবার রেহাই মিলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে আলু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারে জোগান বাড়িয়ে আলুর দাম কমাতে গিয়ে লিখিত নির্দেশ ছাড়াই আলুবোঝাই ট্রাক রাজ্যের নানা সীমান্তে আটকে রাখা হচ্ছে। তারই প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি ও পশ্চিমবঙ্গ হিমঘর অ্যাসোসিয়েশন অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ডাকে। কর্মবিরতির জেরে মঙ্গলবার থেকে খুচরো বাজারে আলুর দাম বাড়তে থাকে। আলুর জোগানেও টান পড়তে থাকে। মধ্যবিত্ত গৃহস্থের হেঁশেলে অস্বস্তি দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের বাজারগুলিতে কোথাও ৪০ টাকা কোথাও কিলো প্রতি ৫০ টাকা দাম উঠে যায়। আর তাতেই সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন: ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে দুর্ঘটনা, মুখ্যমন্ত্রী প্রবেশের আগেই ভেঙে পড়ল তোড়ন, জখম দুই
অন্যদিকে এই অবস্থায় আলুর ক্রেতা–বিক্রেতা সকলেই তাকিয়ে ছিল আজকের বৈঠকের দিকে। এই বৈঠকে জট কাটার পর নানা হিমঘর থেকে আলু বের করা হবে। আর বাজারে জোগান স্বাভাবিক হয়ে যাবে। বৃহত্তর স্বার্থে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়েছে। আলু ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বৃহত্তর স্বার্থে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়েছে। আমরা রাজ্য সরকারের পাশে আছি। তবে রাজ্য থেকে যে আলু বাইরে যায় তা রফতানির বিষয়টিও যেন রাজ্য সরকার খেয়াল রাখে। মন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। বিবেচনা করে দেখবেনও বলেছেন। আমরা আমাদের দাবি লিখিত আকারে রাজ্য সরকারের কাছে জানাচ্ছি।’
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলু নিয়ে যাতে ক্রাইসিস না হয় সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরই বুধবার হুগলিতে বেচারাম মান্না বৈঠকে বসেন। তাঁর হস্তক্ষেপে উঠে গেল প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট। দাম কমবে এবার বলে মনে করা হচ্ছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের নেতা পতিতপাবন দে’র বক্তব্য, ‘ব্যবসায়ীরা কর্মবিরতি তুলে নিয়েছেন। আমরা রাজ্য সরকারকে আলু দিয়ে সাহায্য করব। আমাদের রাজ্যে ১১০ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়। সবটা আমাদের রাজ্যে লাগে না। তাই ভিনরাজ্যে পাঠাতে হয়। আলু একটা অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। আলুর দাম বেশি থাকলে চাষিরা কিছু টাকা পায়।’ আর মন্ত্রী বেচারাম মান্নার কথায়, ‘রাজ্যের মানুষের স্বার্থে ওঁরা ধর্মঘট তুলে নিয়েছেন। ওঁদের কিছু সমস্যা আছে। সেটা জানিয়েছেন। হিমঘর থেকে ২৬ টাকা কিলো দরে আলু দেওয়া হবে। আলু ব্যবসায়ীরা যদি কথা রাখেন তাহলে আমরা ৩০ টাকারও কম দামে আলু খাওয়াতে পারব।’