হাওড়ার বাঁকড়ায় সোদপুরের তরুণীকে আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনায় ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে মূল অভিযুক্ত শ্বেতা খানের পুত্র আরিয়ান খান। অভিযোগ উঠেছে, শ্বেতার ১৩ বছরের নাবালিকা কন্যাও নির্যাতন চালিয়েছিল। বুধবার গল্ফগ্রিন থেকে আরিয়ানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগেই কলকাতার একটি বাড়িতে পাওয়া যায় নাবালিকাকে। তাকে আটক করে ডোমজুড় থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘সুন্দরী মহিলা, রূপ দেখিয়ে…..’, ডোমজুড়ের পর্নকাণ্ডের শ্বেতাকে নিয়ে বিস্ফোরক তৃণমূল নেতা
সোদপুরের তরুণীকে দীর্ঘদিন আটকে রাখার অভিযোগ সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। তবে পর্নোগ্রাফিকাণ্ডের মূল মাথা শ্বেতা এখনও অধরা রয়েছে। তার খোঁজ করছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আরিয়ানের সঙ্গে পরিচয় হয় সোদপুরের ওই তরুণীর। চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণীকে দেখা করতে ডাকে সে। পরে অভিযোগ ওঠে, তাঁকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থায় কাজ দেওয়ার নাম করে হাওড়ার বাঁকড়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। আর তারপরেই সেখানে মাসের পর মাস আটকে রাখে। সেখানে তাঁকে পানশালায় কাজ করতে বাধ্য করা হয় এবং ক্রমাগত পর্ন ভিডিয়োয় অভিনয় করার জন্য মানসিক চাপ দেওয়া হয়। শারীরিক নির্যাতনও চলত নিয়মিত।
পুলিশ জানায়, ওই তরুণীকে মাসের পর মাস আটকে করে রাখে আরিয়ান, তার মা শ্বেতা এবং নাবালিকা বোন। ঘটনা প্রকাশ্যে আসে শুক্রবার। ওই তরুণী ওই দিন কোনওভাবে ওই ফ্ল্যাট থেকে পালিয়ে পরিবারের কাছে ফিরে যান। তারপরেই শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে সাগর দত্ত হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকেই খবর যায় পুলিশের কাছে। দ্রুত তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত তিনজনই ফ্ল্যাট ছেড়ে পালিয়েছে। পুলিশ আরও জানতে পারে, তিনজন আলাদা জায়গায় গা ঢাকা দিয়েছে।
বুধবার কলকাতার গল্ফ গ্রিন এলাকা থেকে পুলিশ আরিয়ান খানকে গ্রেফতার করে। একইদিনে শ্বেতার নাবালিকা কন্যাকেও আটক করে পুলিশ। যেহেতু সে নাবালিকা তাই তাকে জুভেনাইল বোর্ডে হাজির করানো হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শ্বেতা এখনও ফেরার। তাঁর সন্ধানে জোর তল্লাশি চলছে।
হাওড়া দক্ষিণ জেলার ডিসিপি সুরিন্দর সিং জানান, তদন্তে নতুন তথ্য উঠে আসছে। আদালতের অনুমতি মিললেও এখনও অভিযুক্তদের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানো হয়নি। এই মামলায় এখন পর্যন্ত শুধু সোদপুরের তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্তকারীরা বলছেন, শুধু তরুণীকে আটকে রাখা নয়, তাঁর উপর যে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালানো হয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুতর অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে আরও কেউ এই পর্নচক্রের শিকার হয়েছেন কিনা, তা নিয়েও তদন্ত চলছে।