দু’দিন আগেই বাঁকুড়ার আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সেখানে বৃষ্টির সঙ্গে ডিভিসি জল ছাড়ার কারণ ছিল। এবার বৃষ্টি ছাড়াই অকাল বন্যা পরিস্থিতি দেখা গেল। কারণ জল ছেড়েছে ডিভিসি। আর তার জেরে সেই জলে বানভাসী অবস্থা হল উদয়নারায়ণপুরের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। সেখানের প্রায় হাজার বিঘা জমি এখন জলের তলায়। ধান এবং আলু কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। এখন মরশুমে এমন ঘটনা ঘটায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে কৃষকদের মধ্যে। আলু এবং ধান পচে না যায়! বর্ষা আসার আগেই এখন বন্যায় ভাসল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর! আর তার জেরে এখন ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষকরা।
এদিকে প্রত্যেক বছরই বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় উদয়নারায়ণপুরে। বৃষ্টি হলেই জল ছাড়ে ডিভিসি। কিন্তু এখন তো বৃষ্টিই নেই। সেখানে হঠাৎ করে এই জল ছাড়ার জেরে বানভাসী পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন মানুষজন। সেচ দফতর সূত্রে খবর, প্রত্যেক বছরই শীতের শেষে বরো চাষের মরশুমেও জল ছাড়ে ডিভিসি। ব্যতিক্রম এবারও ঘটেনি। খাল দিয়ে ডিভিসির জল জমিতে প্রবেশ করানোর জন্য মুন্ডেশ্বরী নদীর চিংড়া–সহ নানা জায়গায় বাঁধও দেওয়া হয়েছিল। হুগলির বলাইচক গ্রামের চিংড়া খালের উপর বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। ফলে এইসব জায়গায় আগে থেকেই জল জমেছিল। তার উপর ডিভিসি নতুন করে জল ছাড়ায় বিপত্তি ঘটেছে।
আরও পড়ুন: অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ব্যারাকপুরে, অভিযুক্ত প্রতিবেশী যুবক গ্রেফতার
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, ডিভিসির ছাড়া জল বলাইচক গ্রামের চিংড়া খালের উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে উদয়নারায়ণপুরের পাঁচারুল গ্রাম পঞ্চায়েতের সুবল চক এবং দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর মানশ্রী ও আমবাগান এলাকায় ঢুকেছে। দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৭০০ বিঘা আলু চাষের জমি, ১৫০ বিঘা বোরো ধান চাষের জমি তার জেরে রাতারাতি জলের তলায় চলে গিয়েছে। এভাবেই বাঁধ পেরিয়ে জল ঢুকছে উদয়নারায়ণপুরে। জল নাকি আরও বাড়তে শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে অন্যান্য পঞ্চায়েতে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এছাড়া এই ঘটনায় চাপে পড়ে গিয়েছেন কৃষকরা। তাই কৃষকদের বক্তব্য, এখন চাষের জমি জলের তলায় চলে যাওয়ার জেরে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। যদি জলস্তর আরও বাড়ে তাহলে ঘুরে দাঁড়ানোর জায়গা থাকবে না। উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্যাণ গায়েনের বলেন, ‘২০২৪ সালে বন্যায় বলাইচক গ্রামের আশ্রমগোঁড়া সংলগ্ন এলাকায় ২৫০ মিটার নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সে বাঁধ সংস্কার হয়নি। এই আবহে জেলা ও ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উদ্ধার হওয়া আলু সরকারি মূল্যে সুফল বাংলার মাধ্যমে ১০ টাকা কেজি দরে কেনা হবে।’ আর স্থানীয় বিধায়ক সমীর পাঁজার কথায়, ‘কৃষকদের যে আলু আছে, সেগুলি আমরা ন্যায্য মূল্যে সরকারি নিয়ম অনুসারে কিনে নেব।’