দল বহিষ্কার করতেই সিপিআই(এম)-এর বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী। তাঁর দাবি, দলই তাঁকে ট্র্যাপে ফেলেছে! এমনকী, ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করে নিজের সদ্য প্রাক্তন দল সিপিআই(এম) বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি যেন কিছুটা নরম মনোভাব প্রকাশ করলেন প্রবীণ এই রাজনীতিক। জানালেন সিপিআই, নকশাল, তৃণমূল কংগ্রেস - সকলের সঙ্গেই তাঁর ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে, আপাতত তিনি শুধুমাত্র সামাজিক কাজ করবেন!
উল্লেখ্য, দলেরই এক মহিলা কমরেডকে ভার্চুয়ালি যৌন হেনস্থা করার অভিযোগে বংশগোপালকে বরখাস্ত করেছে সিপিআই(এম)। কিন্তু, তারপরও বংশগোপাল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পালটা তাঁর দাবি, 'আমি ট্র্যাপের শিকার। আমারই দলের লোকজন আমার বিরুদ্ধে ট্র্যাপ করল। নিজেরা কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়ল!'
বংশগোপালের বিরুদ্ধে দলের অভ্যন্তরেই তদন্ত চলছিল। তাঁর দাবি, দলের এই তদন্তের উপর তাঁর আস্থা ছিল। অথচ, দল যখন তাঁকে বহিষ্কার করল, তখন সেকথা তাঁকে প্রাথমিকভাবে দলের তরফে জানানো পর্যন্ত হল না! তিনি সেই সিদ্ধান্ত জানতে পারেন সংবাদমাধ্যমে!
টিভি নাইন বাংলা অনুসারে, প্রাক্তন সাংসদ বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় লাগাতার কুৎসা করা হল। পার্টির তদন্তে আস্থা রেখেছিলাম। আর আমাকে দল থেকে বহিষ্কারের খবর আমি জানতে পারলাম না। মধ্যরাতে সংবাদেমাধ্যমের প্রকাশিত খবরে এটা জানতে হল। তাহলে দলের শৃঙ্খলা কোথায়? আমি যে দল দেখেছিলাম, এখন আর সেই দল নেই।'
এই প্রেক্ষিতেই সিপিআই(এম)-কে বংশগোপাল যতটা আক্রমণ করেছেন, ততটা তৃণমূলকেও করেননি। তাঁর অভিযোগ, অতীতেও তাঁকে এই ধরনের ঘটনায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেস আমাকে হয়তো গালিগালাজ করেছে। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেনি। কোনও চক্রান্ত করেনি। যতটা চক্রান্ত করছে আমার নিজের দল আমার বিরুদ্ধে। যখন মন্ত্রী ছিলাম তখনও একটা অংশ চক্রান্ত করত। যখন সাংসদ ছিলাম তখনও আমার বিরুদ্ধে মহিলা ঘটিত সাজানো ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা হয়েছিল।'
এমনকী, বর্তমানে সিপিআই(এম)-এর একাংশের সঙ্গে বিজেপি-র গোপন আঁতাত রয়েছে বলেও দাবি করেছেন বংশগোপাল। তাঁর কথায়, 'কলকাতা থেকে এসে এই জেলায় যাঁরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন,বিজেপির সঙ্গে তাঁদের তলে তলে আঁতাত রয়েছে। তাঁরা তোলাবাজ। সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত। রাজ্যে পরিবর্তনের পর আওয়াজ তোলা হয়েছিল আমার ঘরে নাকি ৫০ কোটি টাকা আছে। কই? এতগুলো বছর পেরিয়ে গেল! তবু কোনও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।'