নিজের মেয়ের সঙ্গেই পাশবিক কাণ্ড ঘটিয়েছিল বাবা। মেয়েকে ধর্ষণ করার পর খুন করেছিল। আসানসোলের পকসো আদালত সেই নৃশংস ঘটনায় ওই ব্যক্তির ফাঁসির আদেশ দিল। ২০২৪ সালের মে মাসে সংঘটিত এই মর্মান্তিক ঘটনায় বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তথ্য প্রণবের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ শাস্তির রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয়, পর্ণশ্রীতে মাদক খাইয়ে বেঁহুশ করিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ
২০২৪ সালের ১৩ মে সকালে হীরাপুর থানা এলাকায় এক কিশোরীর মৃতদেহ তার নিজের বিছানায় পাওয়া যায়। মা সকালে উঠে দেখেন, মেয়ের নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে এবং গলায় কালশিটে দাগ রয়েছে। প্রতিবেশীদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তী ময়নাতদন্তে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ মেলে। নিহত কিশোরীর মা থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তদন্তে উঠে আসে, অভিযুক্ত তাঁর মেয়েকে দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয় এবং ধর্ষণের প্রমাণ হিসেবে ডিএনএ পরীক্ষায় অভিযুক্তের সঙ্গে মিল পাওয়া যায় কিশোরীর যৌনাঙ্গ থেকে।
আদালতে ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়, এবং সব প্রমাণ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রায়ে বলেন, পিতার এই নৃশংস অপরাধ সমাজের সকল নৈতিক ও আইনি সীমা লঙ্ঘন করেছে। এছাড়া, আদালত মৃত কিশোরীর পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেন। মাত্র ১৫ মাসের মধ্যে এই মামলার নিষ্পত্তি নিম্ন আদালতে সম্পন্ন হয়েছে, যা ন্যায়বিচারের পথে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এই রায় সমাজে শিশু ও নারী নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াবে বলে মনে করছে আইনজীবী মহল।