অক্ষয় তৃতীয়াতেই (বুধবার - ৩০ এপ্রিল, ২০২৫) পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথিতে 'সনাতনী হিন্দু সম্মেলন' আয়োজন করার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে শর্তসাপেক্ষে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, একই দিনে একই জেলায় (দিঘা) জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, কাঁথির অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকবেন রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পর এই অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। যদিও তাঁর নির্দেশ, সম্মেলন করতে হবে সর্বাধিক ৩,০০০ মানুষের জমায়েত নিয়ে। তার থেকে বেশি লোক জড়ো করা যাবে না।
উল্লেখ্য, বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই টানাপোড়েন চলছিল। কারণ, ৩০ এপ্রিল যে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে, সেই ঘোষণা বহু আগেই করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বহু ভিভিআইপি। তাছাড়া, বহু সাধারণ মানুষ, ভক্ত ও পর্যটকও মন্দির দর্শন করতে আসবেন। ফলত, সেখানে নিরাপত্তা প্রদান একটি বিরাট বিষয়। বলা বাহুল্য, সেই কারণেই ওই দিন দিঘায় পুলিশ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীর একটা বড় অংশকে ব্য়বহার করা হবে।
এই প্রেক্ষাপটে ওই একই দিনে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে কাঁথিতে 'সনাতনী হিন্দু সম্মেলন' আয়োজন করার ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু, পুলিশ সেই আয়োজনের অনুমতি দেয়নি। পুলিশের বক্তব্য ছিল, একই দিনে একই জেলায় দু'টি বড় কর্মসূচি হলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, ৩০ এপ্রিলের বদলে অন্য় যেকোনও দিন ওই অনুষ্ঠান করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
প্রশাসনের এই অবস্থানের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা রুজু করা হয়। প্রথমে আদালত রাজ্যের উপরেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব দেয়। কিন্তু, রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয়, তাদের পক্ষে ওই অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। এরপর ফের আদালতের দ্বারস্থ হন সংশ্লিষ্ট মামলাকারী। সোমবার এ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ শুনানি চলে।
মামলাকারীর আইনজীবীর যুক্তি ছিল, একই জেলা হলেও দিঘা ও কাঁথির মাঝে ভৌগোলিক দূরত্ব অনেকটা। তাই, দু'টি জায়গাতেই একইসঙ্গে নিরাপদভাবে দু'টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব। সোমবারের শুনানির পর মামলার রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল, ২০২৫) তিনি রায় দেন, ওই সম্মেলন নির্দিষ্ট নির্ঘণ্ট মেনেই করা যাবে। তবে, ৩,০০০-এর বেশি লোক জড়ো করা যাবে না।