আজ, বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তিস্তা নদীর চরের রংধামালি এলাকা পরিদর্শন করলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে তিনি সোজা চলে আসেন জলপাইগুড়িতে। দুর্গতদের দেখতে দিল্লি থেকে সরাসরি উত্তরবঙ্গে এসে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। রংধামালি ক্যাম্পে আশ্রিত দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে দুর্গতদের এক হাজার টাকা করে অ্যাকাউন্টে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন রাজ্যপাল। কিন্তু রাজ্যপালের কাছে দুর্গতরা একশো দিনের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এদিকে কেন একশো দিনের কাজ বন্ধ? কেনই বা আমরা টাকা পাচ্ছি না? রাজ্যপালকে কাছে পেয়ে এইসব প্রশ্ন তোলেন দুর্গতরা। রাজ্যপাল তাঁদের অভাব–অভিযোগ শুনে কেন্দ্র–রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন। মুখ্যসচিবের কাছে বন্যা কবলিত এলাকার রিপোর্ট তলব করেন রাজ্যপাল। সিভি আনন্দ বোসের কাছে রিপোর্টও পাঠিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিব। সিকিমের রাজ্যপালের সঙ্গেও কথা বলেছেন বঙ্গের রাজ্যপাল। তারপর রংধামালি তিস্তা চরে বসবাসকারী মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে গ্রামের শিশুদের নিজের কোলে তুলে নেন রাজ্যপাল। গ্রামে ঢুকে পড়া তিস্তা নদীর জলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
তারপর ঠিক কী ঘটল? অন্যদিকে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। নয়াদিল্লিতেও আন্দোলন করেছে ঘাসফুল শিবির। রাজভবন অভিযান আজকে শুরু হয়েছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচির দিনই উত্তরবঙ্গে চলে এসেছেন রাজ্যপাল। আর এখানেই বকেয়া টাকা পাওয়ার দাবিতে সরব হন বিপর্যয় দুর্গতরা। রাজ্যপাল পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সঙ্গে থাকা জেলা প্রসাশনের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রাজভবন থেকে এক হাজার টাকা সাহায্য পাঠিয়ে দিতে। বিডিও অফিস থেকে সেই অর্থ দুর্গতদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মোহন ভাগবতের সামনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিক্ষোভ, রিপোর্ট তলব করল শাহের মন্ত্রক
আর কী জানা যাচ্ছে? বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে বানভাসী এলাকায় চলে যান রাজ্যপাল। সেখানে ধস বিধ্বস্ত এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন এবং দুর্গতদের জন্য নিয়ে আসেন মিষ্টির প্যাকেট। সকলকে মিষ্টি বিতরণ করেন রাজ্যপাল। দুর্গতদের একজন বলেন, ‘রাজ্যপাল আমাদের এক হাজার করে দিয়েছেন। কিন্তু এখন আমাদের ২–৩ হাজার টাকা ওষুধেই লাগছে। ঘর–বাড়ি নেই, এখন আমরা কীভাবে থাকি?’ আর এক বৃদ্ধা বলেন, ‘সব হারিয়েছি আমরা। এই টাকাতে আমাদের কতটা কী হবে।’ রাজ্যপাল তিস্তার বাঁধ পরিদর্শন করেন। সেখানে দাঁড়িয়ে রাজ্যপাল জানিয়ে দেন, দুর্গতদের জন্য তিনি তাঁর একমাসের বেতন দান করবেন।