রথযাত্রার আগেই পালিত হয় স্নানযাত্রা। এটি আদতে একটি বিশাল স্নান অনুষ্ঠান। এই আচার চলাকালীন, ভগবান জগন্নাথ তাঁর ভাই বলরাম এবং বোন সুভদ্রার সঙ্গে ‘সোনা কুয়া’ বা সোনার কুয়ো থেকে ১০৮ কলসি ঠাণ্ডা, পবিত্র জল দিয়ে স্নান করেন। এই ব্যাপক স্নান অনুষ্ঠানের ফলে দেবতারা ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়েন বলে বিশ্বাস করা হয়। মনে করা হয়, এই সময় প্রভুর জ্বর হয়। তিনি লেপকম্বল মুড়ি দিয়ে থাকেন পরের ১৫ দিন।কী কী হয় আনাসার ঘরে?১৫ দিনের আনাসার সময়কালে দেবতাদের মন্দিরের একটি নির্জন কক্ষে রাখা হয়। ওই ঘরের নাম ‘আনাসার ঘর’। এই সময় তারা জনসাধারণের দৃষ্টির বাইরে থাকে। বিশ্বাস করা হয়, এই সময় তাঁরা বিশ্রাম নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন। আনাসারে থাকার সময় বিশেষ কিছু আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়। মন্দিরের চিকিৎসকরা (রাজ বৈদ্য) ‘দশমূল মোদক’ এবং ‘ফুলুরি তেল’-এর মতো ঐতিহ্যবাহী ভেষজ ওষুধ নিবেদন করেন। কবিরাজের ওই পাঁচন খেয়ে তবে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। এই সময়কালটি অনেকটা কোয়ারেন্টাইনের মতো। এখান থেকে বেরোলে তাঁর নবযৌবন উৎসব পালন করা হয়। এই সময় জগন্নাথের অঙ্গরাগ করানো হয়। ভেষজ রং দিয়ে করা হয় সেই অঙ্গরাগ।পৌরাণিক কাহিনি, মাধব দাসের অসুস্থতাতবে জগন্নাথদেবের অসুস্থতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনিও। কথিত আছে যে, যখন মাধব দাস গুরুতর অসুস্থ হয়েছিলেন, তখন ভগবান তাঁর সেবা করেন। সেবায় দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলেও, তাঁর অসুস্থতার আরও ১৫ দিন বাকি ছিল। করুণাবশত, মাধব দাসের অসুস্থতার সেই ১৫ দিন নিজে গ্রহণ করেছিলেন জগন্নাথ। প্রতি বছর এই স্নানযাত্রার পর সেই অসুস্থতাই প্রকাশ পায়