হিন্দু ধর্মে একাদশীর বিশেষ গুরুত্ব স্বীকার করা হয়েছে। আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী পাপাঙ্কুশা একাদশী নামে পরিচিত। আজ, শনিবার পারাঙ্কুশা একাদশী। ধর্মীয় ধারণা অনুযায়ী পাপের স্বরূপ হাতিকে উপবাসের পুণ্যরূপী অঙ্কুশের দ্বারা ভেদ করা হয় বলে এই তিথির নামকরণ হয় পাপঙ্কুশা একাদশী। এ দিন মৌন থেকে বিষ্ণুর আরাধনা করলে শুভ ফল লাভ করা যায়। মনে করা হয় এদিন নিয়ম মেনে বিষ্ণুর পুজো করলে সমস্ত মনোস্কামনা পূরণ হয়। এই উপবাসের প্রভাবে বৈকুণ্ঠ ধাম লাভ করা যায়।পাপাঙ্কুশা একাদশী শুভক্ষণএকাদশী তিথি শুরু- ১৫ অক্টোবর সন্ধে ৬টা ০৫ মিনিটে।একাদশী তিথি সমাপ্ত- ১৬ অক্টোবর সন্ধে ৫টা ৩৭ মিনিটে।ব্রকভঙ্গের সময়- ১৭ অক্টোবর রবিবার। সকাল ৬টা ২৮ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট।মাহাত্ম্য- মনে করা হয় এই ব্রত পালন করলে যমলোকের যাতনা সহ্য করতে হয় না। এই উপবাসের প্রভাবে ব্যক্তি নিজের জীবনের সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি লাভ করে।পাপাঙ্কুশা একাদশী ব্রতকথাপুরাণ অনুযায়ী বিন্ধ্যাচল পর্বতে ক্রোধন নামক এক শিকারী বসবাস করত। সে অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও হিংস্র ছিল। হিংসা, লুটপাট, মদ্যপান ও কুসঙ্গে তার সম্পূর্ণ জীবন অতিবাহিত হয়। একদিন অকস্মাৎ জঙ্গলে তপস্যারত অঙ্গিরা ঋষির সঙ্গে তার দেখা হয়। অঙ্গিরা ঋষিকে ক্রোধন জানায় যে, সে একজন শিকারী তাই অনের নিরীহ পশু-পক্ষীর হত্যা করতে হয়েছে। সে বলে যে, সমস্ত জীবন পাপ-কার্য করেছে, এর ফলস্বরূপ তাঁকে নরকে যেতে হবে। তখন ক্রোধন অঙ্গিরা ঋষির কাছ থেকে পাপস্খলন ও মোক্ষলাভের উপায় জানতে চায়। এর পরই তাকে আশ্বিন শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে নিয়ম অনুযায়ী পুজো করতে বলেন।ঋষি অঙ্গিরার পরামর্শ অনুযায়ী ওই শিকারী উপবাস রাখে। নিয়ম মেনে বিষ্ণুর পুজো করেন এবং উপবাস রাখেন। বিষ্ণুর আশীর্বাদে শিকারীর সমস্ত পাপ দূর হয়। শিকারীর মৃত্যুর পর যমদূত যখন তাঁকে নিতে আসে, তখন সে চমৎকার দেখে আশ্চর্যচকিত হয়ে পড়েন। কারণ পাপাঙ্কুশা একাদশীর প্রভাবে তাঁর সমস্ত পাপ দূর হয়ে গিয়েছিল। খালি হাতে ফিরে আসতে হয় যমদূতকে। বিষ্ণুর আশীর্বাদে বৈকুণ্ঠ লোকে গমন করে। মন করে।