তমলুকে ২০২৫ সালের ৪ মার্চ মহাপ্রভু মন্দিরে চৈতন্য মহাপ্রভুর আগমন তিথি উপলক্ষে উৎসব শুরু হবে। এই দিন চৈতন্যদেবের মূর্তি সহকারে শহর পরিক্রমা করেন ভক্তরা, সকলে হরিনাম সংকীর্তন করেন।
তিন দিন ধরে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর এই আগমন উৎসব উদযাপিত হয় এখানে। প্রচুর বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী ভক্তের সমাগম হয়। গীতা দান ছাড়াও আরও নানারকম সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
কয়েক হাজার বৈষ্ণব ভক্তের সমাগম হয় এই দিন মন্দিরে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর আগমন তিথি উদযাপন উপলক্ষে। এবার এই উৎসব ৫১৬ বছরে পদার্পণ করল। এমনিতেই তমলুক শহরের ইতিহাস গৌরবময়, অন্যদিকে এখানেই পদার্পণ ঘটেছিল শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর। তাই তাঁর আগমন তিথি উপলক্ষে এই উৎসব হয়। বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী ভক্তদের সমাগম হয় এই দিন। হরিনাম সংকীর্তন ধর্ম সভা পুজো অর্চনা সব কিছুই চলতে থাকে এই মন্দিরে।
আগের বছরই এখানে আনা হয়েছে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ব্যবহৃত পাদুকা যা এসছে নবদ্বীপ থেকে, তাই এই বছর থেকে মানুষ মন্দিরে মহাপ্রভুকে দর্শন করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পাদুকাদর্শনও করতে পারবে।
শোনা যায় শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু এখানে নাকি তিনবার এসেছিলেন। তিনি নবদ্বীপ থেকে পুরী যাত্রাকালীন সময় কালে এই শহরে এসেছিলেন। তিনি তিনবার এলেও তার প্রথমবার আসার তিথি স্মরণ করে প্রত্যেক বছর মন্দিরে নাম গান, শোভাযাত্রা কীর্তন ও পুজো পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। এই তিন দিন ধরে হাজার হাজার ভক্তের সমাগমে মন্দির মুখরিত হয়ে ওঠে।
১৫১০ সালের ২০ ফাল্গুন শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে প্রথম তমলুক শহরের নরপোতায় অর্থাৎ এখন যেখানে মহাপ্রভু মন্দির আছে সেখানে পা রেখেছিলেন শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু। এখানে তিনি রাত্রি বাস করেছিলেন। এরপরে ১৫১৫ সালেও আবার তিনি এখানে এসেছিলেন এবং ১৫ দিন কাটিয়েছিলেন এই স্থানে।
এখানে যে মহাপ্রভুর বিগ্রহ আছে তা ১৫৩৪ সালে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর ঘনিষ্ঠ আদি কবি শ্রীল বাসুদেব ঘোষ স্থাপন করেছিলেন। এবার এখানে অনুষ্ঠিত মহোৎসবে গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের প্রধান আচার্য কৃষ্ণ কেশবানন্দ দেব গোস্বামী উপস্থিত থাকবেন বলে জানা যায়। এখানেই রয়েছে অষ্টধাতুর সিংহাসনে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু পাদুকা। মন্দিরের গর্ভ গৃহে এই পাদুকা গত বছর আনা হয়েছে এবং সেখানেই পুজো করা হয়। তবে এবার পাদুকাকে সকলের সামনে আনা হবে এবং সকলে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পাবেন।
শোনা যায় মহাপ্রভুর পাদুকাগুলির মধ্যে যে সময় তিনি সন্ন্যাস নিয়েছিলেন সেই সময়ের পাদুকা রয়েছে তমলুকের এই মন্দিরে। তাঁর কৈশোরের পাদুকা রয়েছে নবদ্বীপে এবং পুরীতে রয়েছে তার অন্তর্ধান সময়কালীন পাদুকা। এবারই প্রথম পাদুকাকে সকলের সামনে এনে পুজোর দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে মন্দিরের পক্ষ থেকে।
(এই প্রতিবেদনের তথ্য মান্যতা নির্ভর। এর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। )