রবিবার একেবারে সকালেই শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা ভারত। স্বরস্বতীর পুজোর পর দিনই যেন বিসর্জন হয়ে গেল সুরের সরস্বতীর। সকলকে চোখের জলে ভাসিয়ে চলে গেলেন সুরসাম্রাজ্ঞী। বিগত ২৭ দিন ধরে করোনার পাশাপাশি নিউমোনিয়ার সঙ্গে লড়াই করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। তবে রবিবার সকালে প্রয়াত হন কোকিলকণ্ঠী।
৯ জানুয়ারি তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। এর পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছিল লতার। ৩০ জানুয়ারি তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ভেন্টিলেশন থেকে বের করেও নিয়ে আসা হয় সুরসম্রাজ্ঞীকে। তবে শনিবার ফের তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। দেওয়া হয় ভেন্টিলেশনে। দিদির সাথে দেখা করতে শনিবার হাসপাতালে আসেন আশা ভোঁসলেও। তবে শেষ রক্ষা হল না! দেশবাসীকে কাঁদিয়ে তারাদের দেশে চলে গেলেন লতা মঙ্গেশকর।
তাঁর মৃত্যুতে শুধু ভারতই নয়, ভারতের বাইরের গুণমুগ্ধরাও শোকস্তব্ধ। সীমান্তের ওপারে পাকিস্তানেও সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ক্রিকেটার, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পর্যন্ত শোক বার্তা পাঠিয়েছেন। এ বার প্রয়াত কিংবদন্তি শিল্পীর সঙ্গে টেলিফোনে তাঁর কথোকথনের স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসলেন শোয়েব আখতার। ২০১৬ সালে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে টেলিফোনে তাঁর কথোপকথন হয়েছিল। ওই বছর শোয়েব যখন শেষ বার ভারতে কমেন্ট্রি করতে এসেছিলেন, তখন একদিন প্রোডাকশনের একজনের সাহায্য নিয়ে বহু দিনের ইচ্ছে পূর্ণ করেছিলেন তিনি। ফোনে কথা বলেছিলেন লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে। সেই স্মৃতিতেই ডুব দিলেন শোয়েব। রাওয়ালপিণ্ডি এক্সপ্রেস মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সুর সম্রাজ্ঞীর ব্যবহারে। কথোপকথনের শুরুতেই লতা তাঁকে মা বলে ডাকতে বলেছিলেন। শোয়েব জানান, লতা তাঁকে বলেছিলেন তিনি নাকি সচিন বনাম শোয়েবের লড়াই খুব বেশি উপভোগ করতেন। এবং ক্রিকেট খেলা তাঁর পছন্দের ছিল।
আবেগ প্রবণ শোয়েব তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে বলছেন, ‘আমাকে তিনি মা বলে ডাকতে বলেছিলেন। তাঁর সুন্দর ব্যবহারে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আমি ওঁর সঙ্গে সামনে গিয়ে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলাম। সেই সময়ে নবরাত্রি চলছিল। উনি আমাকে দু'দিন পর তাই ওঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানে ফেরার টিকিট থাকায় আমাকে ফিরতে হয়েছিল। তবে বলেছিলাম পরের বার আসলে নিশ্চয়ই দেখা করব। কিন্তু আফসোস আর দেখা হয়নি। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় আর ভারতে আসা হয়নি আমার। দেখা হয়নি ওঁর সঙ্গেও। এটা আমার জীবনের বড় আফসোস।’
শোয়েবের সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে লতা তাঁকে জানিয়েছিলেন, নুরজাহান, মেহেদী হাসান, গোলাম আলির সঙ্গে তিনি প্রচুর কাজ করেছেন। তাঁরা প্রত্যেকে তাঁকে ভালোবাসতেন। নুরজাহানকে নিজের বড় দিদি মনে করতেন লতা। কোকিলকন্ঠী শোয়েবকে দু'টি উপদেশও দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, জীবনে দু'টি বিষয় কখনও না ভুলতে। এক নম্বর নিজের নম্র ব্যবহার এবং দ্বিতীয় জিনিস মানুষের পাশে থাকা, তাঁকে সাহায্য করা। আর সুরসাম্রাজ্ঞীর প্রয়াণে শোকে বিহ্বল শোয়েব আখতার।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।